মেয়েদের অনলাইন বিজনেস আইডিয়া সেরা ৫টি
ইন্টারনেটের বদৌলতে এখন ঘরে বসে অনলাইনে বিজনেস করা সম্ভব। এই লেখাটিতে মেয়েদের অনলাইন বিজনেস আইডিয়া সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে। এবং বর্তমানে লাভজনক কয়েকটি বিজনেস আইডিয়া উল্লেখ করা হবে।
বর্তমানে পুরুষের তুলনায় নারীরা কোন অংশের পিছিয়ে নেই, আপনি যদি একজন নারী হয়ে থাকেন এবং ব্যবসা করে স্বাবলম্বী হতে চান তাহলে অনলাইনের মাধ্যমে ব্যবসা করতে পারেন। ইন্টারনেটে ব্যবসা বলতে বুঝানো হয়েছে ইন্টারনেটে সংক্রীয় থাকা লোকদের টার্গেট করে তাদের কাছে কোন পণ্য বা সার্ভিস বিক্রি করা।
সোশ্যাল মিডিয়াগুলো ব্যবহার করে খুব সহজেই এই ব্যবসা পরিচালনা করতে পারবেন। যদি আপনি সরাসরি গ্রাহকদের বাসায় গিয়ে মাল পৌঁছে দিয়েন না আসতে পারেন সেক্ষেত্রে কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে পৌঁছাতে পারবেন।
মেয়েদের অনলাইন বিজনেস আইডিয়া
মেয়েদের অনলাইন বিজনেস আইডিয়াগুলো হল অনলাইনে খাবার বিক্রি করা, জামা কাপড় বিক্রি, হাতের তৈরি শোপিস বিক্রি, অনলাইনে ফ্রিল্যান্সিং করে আয়, কনটেন্ট রাইটিং সার্ভিস প্রদান ইত্যাদি।
ঘরে বসে অনলাইনে বিজনেস করার ফলে মেয়েদের অনেক বাড়তি সুবিধা হয়। যেমন পারিবারিক কাজ সামলানোর পাশাপাশি ব্যবসা চালিয়ে যেতে পারে এবং ইসলামিক নির্দেশ অনুযায়ী ঘরে বসে পর্দার বরখেলাপ না করে এই ব্যবসা পরিচালনা করতে পারবে।
সাধারণত অনলাইনে দুই ধরনের ব্যবসা পরিচালনা করা যায় ১: প্রোডাক্ট ব্যবসা, ২: সার্ভিস প্রদান ব্যবসা। এই ব্যবসা পরিচালনার সিস্টেম সম্পর্কে নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে তার আগে মেয়েদের অনলাইন বিজনেস আইডিয়া গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেই।
১.অনলাইনে খাবার বিক্রি করে আয়
বর্তমানে অনলাইনে খাবার বিক্রি করা একটি জনপ্রিয় ইনকামের মাধ্যম। আপনার যদি খাবার তৈরিতে দক্ষতা থাকে তাহলে ঘরেবসে খাবার তৈরি করে Foodpanda, Foodtong, Foodpeon, Cookups এই ফুড ডেলিভারি সার্ভিস গুলোর মাধ্যমে বিক্রি করতে পারবেন।
এছাড়াও ফেসবুকে কিংবা ইউটিউবে একটি অ্যাকাউন্ট ক্রিয়েট করে মার্কেটিং এর মাধ্যমে খাবারগুলো বিক্রি করতে পারবেন। বর্তমানে খাবার বিক্রি একটি লাভজনক ব্যবসা আইডিয়া, এই ব্যবসা করে সফল হওয়ার জন্য খাবার তৈরিতে বিশেষ দক্ষতা থাকতে হবে।
কাস্টমারের মনোযোগ আকর্ষণের জন্য আধুনিক খাবার তৈরি করতে হবে এবং রান্নার কৌশলের মধ্যে একটু পার্থক্য সৃষ্টি করতে হবে। যার ফলে আপনার তৈরি খাবারগুলো ইউনিক মনে হয়। এছাড়াও বিভিন্ন রেস্টুরেন্টের সাথে যোগাযোগ করে আপনার তৈরি খাবার গুলো বিক্রি করতে পারেন।
গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি পোস্টঃ
২.অনলাইনে জামা কাপড় বিক্রি করে আয়
জামা কাপড়ের ব্যবসা বর্তমানে অনলাইনে জমে উঠেছে। বাজারে গিয়ে সময় অপচয় না করে ঘরে বসে অনলাইনের মাধ্যমে পছন্দের জামাকাপড় অর্ডার করতে পারেন। অনেক মেয়েরা অনলাইনে জামা কাপড়ের বিজনেস করে ইতিমধ্যে স্বাবলম্বী হয়েছে।
বিশেষ করে ফেসবুক পেজের মাধ্যমে মেয়েরা অল্প পুজি ইনভেস্ট করে এই বিজনেস পরিচালনা করতে পারেন। জামাকাপড়ের ব্যবসা করার জন্য প্রথমে পাইকারি দামে কিছু জামাকাপড় ক্রয় করে আনতে হবে। এরপরে ফেসবুক পেইজে অ্যাড দিয়ে অথবা লাইভ করে এগুলো বিক্রয় করতে পারবেন।
ইন্টারনেটের উন্নতির ফলে বর্তমানে ব্যবসা করাটা অনেক সহজ হয়ে গিয়েছে। পূর্বে ব্যবসা করার কথা ভাবলে মনে হতো একটি দোকান তৈরি করতে হবে এবং অনেক কর্মচারী প্রয়োজন হবে। কিন্তু না! ইন্টারনেটের বদৌলতে বর্তমানে ঘরে বসে অনলাইনে জামা কাপড় বিক্রি করা যাবে।
৩.অনলাইনে শোপিস বিক্রি করা
শোপিস বিক্রি করার অন্যতম একটি জনপ্রিয় প্ল্যাটফর্ম হল অনলাইন। অনলাইনের মাধ্যমে ওয়েবসাইট তৈরি করে অথবা ফেসবুকে পেজ তৈরি করে আপনার হাতে তৈরি শোপিস অথবা পাইকারি দামে শোপিস ক্রয় করে বিক্রি করতে পারবেন।
একই পদ্ধতিতে কিছু ইউনিক শোপিস পাইকারি দামে ক্রয় করে এনে অনলাইনে এড দিয়ে অথবা বিভিন্ন ফেসবুক গ্রুপে পোস্ট করে এগুলো বিক্রয় করতে পারবেন। এছাড়া যদি আপনি নিজে শোপিস তৈরি করতে পারেন, তাহলে এগুলো অনলাইনে বিক্রি করে অনেক লাভবান হতে পারবেন।
৪.অনলাইনে ফ্রিল্যান্সিং করে আয়
ফ্রিল্যান্সিং একটি সার্ভিস প্রদান ব্যবসা। বর্তমানে অনেক মেয়েরা ঘরে বসে অনলাইনে ফ্রিল্যান্সিং করে ইতিমধ্যে নিজেদের স্বাবলম্বী হিসেবে পুরো বিশ্বের কাছে পরিচিত করেছে। আমরা বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন পত্রিকার হেডলাইন ও নিউজ পেপারের হেডলাইনে দেখতে পাই এই ধরনের নিউজ গুলো।
ফ্রিল্যান্সিং করার জন্য আপনার একটি কম্পিউটার থাকা প্রয়োজন, এবং যে সেক্টর নিয়ে ফ্রিল্যান্সিং শুরু করতে চাচ্ছেন উত্তর সেক্টরের উপরে পরিপূর্ণ দক্ষতা অর্জন করে ওই ধরনের সার্ভিস প্রদান একটি ব্যবসা চালু করতে পারেন।
মনে করেন আপনি গ্রাফিক্স ডিজাইনে পারদর্শী, তাহলে অনলাইনে গ্রাফিক্স ডিজাইনিং সার্ভিস রিলেটেড একটি ফেসবুক পেইজ অথবা ওয়েবসাইট ক্রিয়েট করে এই ব্যবসা পরিচালনা করতে পারেন। এবং আপনার ব্যবসার বড় পরিসরে হলে নিজে একটি অফিস স্থাপন করতে পারেন।
৫.কনটেন্ট রাইটিং করে টাকা ইনকাম
কনটেন্ট রাইটিং ফ্রিল্যান্সিং এর অন্তর্ভুক্ত। আপনি যেই লেখাটি বর্তমানে পড়তেছেন এটি একটি কন্টেন্ট, এই কনটেন্টটি আমি লিখেছি। ঠিক আপনি ঘরে বসে এভাবে কনটেন্ট রাইটিং করে টাকা ইনকাম করতে পারবেন। কনটেন্ট রাইটিং এ পারদর্শী হলে একটি কনটেন্ট রাইটিং সার্ভিস প্রদান এজেন্সি তৈরি করতে পারেন।
এছাড়াও বর্তমানে কনটেন্ট রাইটিং এর চাহিদা অনেক বেশি, আপনি কনটেন্ট রাইটিং শিখে ফাইবার উপয়ার্ক ও ফ্রিল্যান্সারের মত বড় বড় মার্কেটপ্লেস গুলোতে কাজ করতে পারেন।
প্রোডাক্ট ব্যবসা কি?
প্রোডাক্ট ব্যবসা বলতে বুঝানো হয়েছে হাতে তৈরি অথবা কোন প্রোডাক্ট ক্রয় করে অনলাইনের মাধ্যমে বিক্রি করে গ্রাহকদের বাসায় পৌঁছে দেওয়া। যেমনঃ খাবার, জামাকাপড়, শপিজ, ইত্যাদি। অনলাইনের মাধ্যমে কোন গ্রাহক পণ্যগুলো অর্ডার করলে কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে তার বাসায় পৌঁছে দিতে হবে।
আপনি যদি এই প্রোডাক্টগুলো হাতে তৈরি করতে পারে তাহলে অনেক বেশি লাভবান হবেন। এছাড়াও চাইলে খুচরা বা পাইকারি ক্রয় করে অথবা কর্মচারী দিয়ে এগুলো তৈরি করিয়ে অনলাইনের মাধ্যমে বিক্রি করতে পারেন।
সার্ভিস প্রদান ব্যবসা কি?
সার্ভিস প্রদান ব্যবসা বলতে বুঝানো হয়েছে অনলাইনে কোন কাস্টমারের অর্ডারকৃত সার্ভিস প্রদান করা। তথা এই ব্যবসায় কোন প্রোডাক্ট কাস্টমারের বাসায় পৌঁছে না দিয়ে আপনি ঘরে বসে এই সার্ভিসটি পৌঁছে দিতে পারবেন। যেমনঃ ফ্রিল্যান্সিং করা, কনটেন্ট রাইটিং, গ্রাফিক্স ডিজাইন, ডিজিটাল মার্কেটিং ইত্যাদি।
কোন কাস্টমার যখন এই সার্ভিস গুলো আপনার কাছ থেকে অর্ডার করবে তখন আপনি ঘরে বসে এগুলো সম্পাদন করে দিতে পারবেন। এজন্য আলাদা কুরিয়ার করে প্রোডাক্ট কাস্টমারের বাসায় পাঠাতে হবে না। বর্তমানে অনলাইনে সার্ভিস প্রদান ব্যবসা অনেক লাভজনক।
অনলাইন ব্যবসা করার জন্য কি প্রয়োজন
অনলাইনে ব্যবসা করার জন্য প্রথমে একটি মোবাইল কিংবা কম্পিউটার এবং ইন্টারনেট কানেকশন থাকতে হবে। যদি আপনারা প্রোডাক্ট ব্যবসা করেন তাহলে ভালো প্রোডাক্ট তৈরির দক্ষতা ও যত দ্রুত সম্ভব কাস্টমারের কাছে প্রোডাক্ট পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করতে হবে।
অনলাইনে ব্যবসা শুরু করার জন্য প্রথমে একটি ওয়েবসাইট এবং ফেসবুক পেজ তৈরি করবেন। বর্তমানে ফেসবুক মার্কেটপ্লেস থেকে অনেক অর্ডার পাওয়া যায়, তাই প্রথম পর্যায়ে ওয়েবসাইট ক্রিয়েট না করে শুধুমাত্র ফেসবুক পেজ থেকে অর্ডার গ্রহণ করতে পারেন।
FAQs
বর্তমানে মেয়েদের সব থেকে বেশি লাভজনক ব্যবসা আইডিয়াগুলো হলো খাবার তৈরি করা এবং অনলাইনে জামা কাপড়ের ব্যবসা। ইন্টারনেটের যুগে একটি মোবাইল এবং কম্পিউটার দিয়ে ঘরে বসে এই ব্যবসা গুলো পরিচালনা করতে পারবেন।
মেয়েদের জন্য ক্ষুদ্র ব্যবসা আইডিয়া গুলোর মধ্যে অন্যতম হলো শিক্ষকতা করা। তথা ঘরে বসে অনলাইনের মাধ্যমে অথবা অফলাইনে প্রাইভেট ব্যাচ পরিয়ে টাকা ইনকাম করতে পারবেন।