Business idea

নতুন ব্যবসার আইডিয়া সেরা ১০টি

নিজেকে সফল উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তোলার জন্য লাভজনক ব্যবসার বিকল্প নেই। আজকের আর্টিকেলে আমরা কয়েকটি লাভজনক নতুন ব্যবসার আইডিয়া সম্পর্কে আলোচনা করব।

আপনি যদি নতুন ব্যবসা শুরু করতে চান কিন্তু সঠিক ব্যবসা আইডিয়া খুঁজে পান না, তাহলে এই লেখাটি আপনার জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। আমি শুধুমাত্র বর্তমান সময়ের কয়েকটি লাভজনক ব্যবসা আইডিয়া শেয়ার করব, এখান থেকে বাছাই করে ভালো একটি ব্যবসা আপনাকে খুঁজে বের করতে হবে।

আপনি এই ব্যবসা গুলো পড়ালেখা কিংবা চাকরির পাশাপাশি পার্টটাইম হিসেবে করতে পারেন। অথবা নিজেদের ইনকামের একমাত্র মাধ্যম হিসেবে ব্যবসা গুলো শুরু করতে পারেন।

নতুন ব্যবসার আইডিয়া

নতুন ব্যবসা আইডিয়ার মধ্যে রয়েছে Online Agency ব্যবসা। এই ব্যবসাটি যেকোনো ডিজিটাল প্রোডাক্ট অথবা ডিজিটাল সার্ভিসের উপরে ভিত্তি করে গড়ে তুলতে পারেন। বিশেষ করে গ্রাফিক্স ডিজাইন, ওয়েব ও অ্যাপস ডেভেলপমেন্ট, ডিজিটাল মার্কেটিং ইত্যাদি।

এছাড়াও অনলাইনে ও অফলাইনে আরো অনেক লাভজনক ব্যবসা রয়েছে। হাজার হাজার ব্যবসা আইডিয়াগুলোর মধ্য থেকে বর্তমান সময়ের পরিপ্রেক্ষিতে কয়েকটি লাভজনক ব্যবসা আইডিয়া খুঁজে বের করে আজকের আর্টিকেলটি সাজানো। চলুন জেনে নেই নতুন ব্যবসার আইডিয়া সম্পর্কে।

১.অনলাইন এজেন্সি ব্যবসা

আমরা পূর্বেই অনলাইন এজেন্সি ব্যবসা সম্পর্কে জেনেছি। এই ব্যবসাটি যেকোনো ডিজিটাল প্রোডাক্ট ও ডিজিটাল সার্ভিসের উপরে ভিত্তি করে শুরু করতে পারবেন। এই তথ্যপ্রযুক্তির বিপ্লবের যুগে ডিজিটাল সার্ভিসগুলোর বিকল্প নেই।

বর্তমানে বিভিন্ন কোম্পানি ও ব্র্যান্ডগুলো অনলাইনের মাধ্যমে বিভিন্ন ফ্রিল্যান্সারদের কাছ থেকে ডিজিটাল সেবা গ্রহণ করে। আপনার যদি ডিজিটাল সেবা বা ডিজিটাল সার্ভিসের কোন সেক্টরে দক্ষতা থাকে সেক্ষেত্রে আপনি খুব সহজেই ওই সেক্টরের উপর ভিত্তি করে একটি অনলাইন এজেন্সি ব্যবসা শুরু করতে পারেন।

ডিজিটাল সেবা বা সার্ভিস গুলোর মধ্যে রয়েছে ডিজিটাল মার্কেটিং, অনলাইন নেটওয়ার্ক মার্কেটিং, গ্রাফিক্স ডিজাইন, ভিডিও এডিটিং, অ্যানিমেশন, কনটেন্ট রাইটিং, ওয়েব ডেভেলপমেন্ট, অ্যাপস ডেভেলপমেন্ট, প্রোগ্রামিং, সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্ট ইত্যাদি।

অনলাইনের মাধ্যমে একটি ফেসবুক পেইজ এবং একটি ওয়েবসাইট তৈরি করে এই ব্যবসাটি শুরু করতে পারেন। তবে অনলাইনে এজেন্সি ব্যবসা শুরু করার জন্য আপনার যেকোনো একটি সেক্টরে পারদর্শী হতে হবে।

২.অনলাইনে কোর্স বিক্রি

তথ্য প্রযুক্তির বিপ্লবে এখন আমরা ঘরে বসে যেকোন বিষয়ের উপর জ্ঞান অর্জন করতে পছন্দ করি। আপনি এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে আপনার দক্ষতা ব্যবহার করে অনলাইনে কোর্স বিক্রি করতে পারেন। বর্তমানে সকল সমস্যার সমাধান ও নূতন স্কিল শেখার জন্য ইন্টারনেট ব্যবহার হয়।

প্রাতিষ্ঠানিক কোন শিক্ষা অথবা আউটসোর্সিং কোন স্কিল শেখার কৌশল মোবাইলে রেকর্ড করে সেগুলো অনলাইনে বিক্রি করতে পারবেন। এগুলো বিক্রির জন্য ইউটিউব, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, ব্লগ ওয়েবসাইট, পেইড এডভার্টাইজমেন্ট ব্যবহার করতে পারেন।

আজকাল অনলাইনে কোর্স বিক্রি করে অনেকেই প্রতি মাসে লক্ষ লক্ষ টাকা ইনকাম করছে। ভিডিও রেকর্ডিং ক্লাসের পাশাপাশি আপনারা গুগল মিট অথবা জুমের মাধ্যমে অনলাইনে লাইভ ক্লাস নিতে পারেন।

৩.ট্যুরিজম ব্যবসা

প্রতিবছর বাংলাদেশের দর্শনীয় স্থানগুলোতে প্রচুর পর্যটক ভিড় করে। এর মধ্যে দেশি পর্যটকের পাশাপাশি বিদেশি অনেক পর্যটক রয়েছে। যাদের মধ্যে বেশিরভাগেরই ভ্রমণের পূর্ব অভিজ্ঞতা নেই বললেই চলে।

তাদের বিভিন্ন ট্রাভেল এজেন্সির সহযোগিতা নিতে হয়। আপনার যদি ভ্রমণ সম্পর্কে ধারণা থাকে তাহলে আপনি এই সকল পর্যটকদের কাস্টমাইজ ট্যুর প্যাকেজ অফার করতে পারেন। যার মধ্যে হোটেল বুকিং, এয়ার টিকেট অথবা ট্রেনের টিকেট, ভ্রমণের স্থান, খাবার ইত্যাদি থাকবে।

৪.জিম সেন্টার তৈরি

শারীরিকভাবে ও মানসিকভাবে সুস্থ থাকার জন্য জিমের গুরুত্ব অপরিসীম। বর্তমানে প্রায় ৮০% তরুণ তরুণীরা জিমে আগ্রহী। কিন্তু সব জায়গায় জিম সেন্টার না থাকার ফলে, এই সেক্টরটি অনেকটা পিছিয়ে আছে।

আপনি সুন্দর একটি জায়গা নির্বাচন করে, একটি জিম সেন্টার তৈরি করতে পারেন। জিম সেন্টারের ব্যবসায় প্রচুর লাভ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বিভিন্ন ধরনের মেশিনারি ক্রয় এবং জিম মাস্টারের বেতন সহ এই ব্যবসায় আপনাকে প্রচুর টাকা ইনভেস্ট করতে হবে।

৫.মোবাইল গেমস তৈরি

ইন্টারনেটের বিপ্লবের ফলে আমাদের বিনোদন অনেকটা মোবাইল কেন্দ্রিক হয়ে উঠেছে। আমরা অবসর সময়ে গেম খেলতে পছন্দ করি। আপনার কাছে পর্যাপ্ত মূলধন থাকলে একটা আধুনিক মোবাইল গেমস তৈরি করতে পারেন।

বাংলাদেশে খুবই কম কোম্পানি রয়েছে যারা মোবাইল গেমস তৈরি করে। তাই এই সেক্টরে আপনার কম্পিটিটার খুবই কম। এছাড়াও এই মার্কেট অনেক বড়, আপনি যদি ভালো একটি মোবাইল গেমস তৈরি করতে পারেন অবশ্যই সেটা জনপ্রিয় হবে।

৬.মধুর ব্যবসা

সকলের পছন্দের একটা খাবার মধু। মধু আমাদের শরীরের বিভিন্ন রোগের মহাঔষধ হিসেবে কাজ করে। বর্তমান সময়ে মধুর ব্যবসা একটি জনপ্রিয় লাভজনক ব্যবসা। আপনি এই ব্যবসাটি অফলাইনের পাশাপাশি অনলাইনে ফেসবুক পেইজ অথবা ওয়েবসাইটের মাধ্যমে করতে পারবেন।

মধুর ব্যবসা করার জন্য প্রথমে আপনাকে ১০০% অরজিনাল মধু সংগ্রহ করতে হবে। এগুলো ভালোভাবে প্যাকেটজাত করে কাস্টমারদের কাছে পৌঁছে দিতে হবে। সরাসরি সুন্দরবন থেকে যারা মধু কাঁটে, তাদের সাথে যোগাযোগ করে এগুলো সংগ্রহ করতে পারেন।

৭.গিফট শপ তৈরি

আমাদের আত্মীয়-স্বজন ও প্রিয় মানুষকে উপহার দেয়ার জন্য বিভিন্ন ধরনের গিফট সামগ্রীর প্রয়োজন হয়। কিন্তু শহরে পর্যাপ্ত গিফট শপ না থাকায়, এর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। আপনার কাছে পর্যাপ্ত মূলধন থাকলে একটি গিফট শপের ব্যবসা শুরু করতে পারেন।

নিত্য নতুন ডিজাইনের দারুন সব গিফট সংগ্রহ করে আপনার শপে বিক্রি করতে পারেন। অন্যান্য সকল প্রোডাক্ট এর তুলনায় গিফটের প্রোডাক্টে লাভ বেশি হয়। গিফটের পাশাপাশি আপনারা একই দোকানে ফুলের ব্যবসাও করতে পারেন। জানতে পারেনঃ ফুলের ব্যবসা করার নিয়ম সম্পর্কে

৮.হোম মেইড ফুড ব্যবসা

দোকানের প্যাকেটজাত খাবারের তুলনায় হোমমেইড খাবারের চাহিদা অনেক বেশি। স্বাস্থ্য সচেতন মানুষ ঘরে তৈরি খাবার বেশি পছন্দ করে। কেননা দোকানের খাবারগুলো অনেক ক্ষেত্রে ভেজাল ও অস্বাস্থ্যকর হয়ে থাকে।

আপনি নির্দিষ্ট কোন রেসিপি ভালোভাবে রান্না করতে পারলে, ঘরেবসে একটি হোমমেড ফুড বিজনেস দাঁড় করাতে পারেন। অনলাইনে ও অফলাইনে এই খাবারগুলো বিক্রি করতে পারেন। আপনার তৈরি খাবারের স্বাদ ভালো হলে আপনার ব্যবসার চাহিদা আস্তে আস্তে বৃদ্ধি পাবে।

বিশেষ করে মেয়েরা ঘরে বসে এই ব্যবসাটি শুরু করতে পারেন। হোম মেইড খাবারের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের আচার বা চাটনি, পিঠাপুলি, ফাস্টফুড, কেক ও বিস্কিট ইত্যাদি।

৯.অনলাইনে ই-কমার্স ব্যবসা

ই-কমার্স ব্যবসাকে নূতন বলব না, তবে আপনি এই ব্যবসাটি নতুন করে শুরু করতে পারেন। যেমন নুতন product সংগ্রহ করে নুতন পদ্ধতিতে অনলাইনে বিক্রি করতে পারেন। ই-কমার্স ব্যবসা বলতে বোঝানো হয় অনলাইনে কোন কিছু বিক্রি করকে।

বর্তমানে ৮০% লোক ঘরে বসে অনলাইনে প্রোডাক্ট ক্রয় করতে পছন্দ করে। আপনি এই চাহিদার উপর ভিত্তি করে একটি ই-কমার্স ব্যবসা দাঁড় করাতে পারেন। ফেসবুক পেইজ অথবা ওয়েবসাইটের মাধ্যমে বিভিন্ন প্রোডাক্ট এর ছবি পোস্ট করে মার্কেটিং করবেন।

অথবা আপনারা পেইড এডভার্টাইজমেন্ট এর মাধ্যমেও আপনার প্রোডাক্টের মার্কেটিং করতে পারেন। অনলাইনে কাস্টমারদের থেকে অর্ডার নিয়ে, কুরিয়ার সার্ভিস তথা ডেলিভারি কোম্পানির মাধ্যমে তাদের বাসায় প্রোডাক্টগুলো পৌঁছে দিবেন।

১০.ফ্রিল্যান্সিং ট্রেনিং সেন্টার তৈরি

বাংলাদেশে চাকরির খাত অনেকটা কমে আসায় বেকার তরুণরা ফ্রিল্যান্সিং এর দিকে আগ্রহ দেখাচ্ছে। আপনার যদি ফ্রিল্যান্সিং এর কোন সেক্টর সম্পর্কে অভিজ্ঞতা থাকে সেক্ষেত্রে একটি ফ্রিল্যান্সিং ট্রেনিং সেন্টার তৈরি করতে পারেন।

এর জন্য প্রথম অবস্থায় আপনাকে কয়েকটি কম্পিউটার ক্রয় করতে হবে, এরপরে একটি দোকান ভাড়া নিয়ে সুন্দর করে একটি ট্রেনিং সেন্টার তৈরি করতে হবে। যদি সঠিকভাবে একটি ট্রেনিং সেন্টার তৈরি করতে পারেন সেক্ষেত্রে প্রতি মাসে পর্যাপ্ত টাকা ইনকাম করতে পারবেন।

লাভজনক ব্যবসা আইডিয়া

উপরে উল্লেখিত ব্যবসা আইডিয়াগুলো ব্যতীত বর্তমানে আরো অনেক লাভজনক ব্যবসা রয়েছে। যেমনঃ

শেষ কথা

সম্মানিত পাঠক বৃন্দ আশাকরি নতুন ব্যবসার আইডিয়া সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন। উপরে উল্লেখিত ব্যবসা আইডিয়া গুলোর মধ্য থেকে আপনি আপনার চাহিদা অনুযায়ী একটি সেরা ব্যবসা আইডিয়া বাছাই করতে পারেন।

আপনার কাছে কোন ব্যবসা আইডিয়াটি সেরা মনে হয়েছে এবং কোন ব্যবসাটি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কমেন্টের মাধ্যমে আমাদের জানাবেন।

FAQs

নতুন ব্যবসা শুরু করতে কত টাকা মূলধন প্রয়োজন?

কত টাকা মূলধন প্রয়োজন এটা নির্ভর করবে আপনার ব্যবসার পরিধি এবং ব্যবসার কোয়ালিটির ওপর। তবে মোটামুটি পর্যায়ে একটি ব্যবসা শুরু করতে ৫০,০০০ থেকে ১,০০,০০০ টাকা প্রয়োজন।

২০২৩ সালে লাভজনক ব্যবসা কোনটি?

২০২৩ সালে সবথেকে লাভজনক ব্যবসা হল অনলাইনে শর্ট ফর্ম কন্টেন্ট এজেন্সি তৈরি। শর্ট ফর্ম কন্টেন্ট এজেন্সির কাজ হল বিভিন্ন কোম্পানির জন্য ছোট ভিডিও তৈরি করে টিকটক ও অন্যান্য প্ল্যাটফর্মে পাবলিশ করার মাধ্যমে ওই কোম্পানির মার্কেটিং করা।

Business Of BD

হাই,ব্যবসা নিয়েই আমার পড়াশোনা এবং ব্যবসা নিয়েই আমার ক্যারিয়ার। ব্যবসা নিয়ে লিখতে ভালবাসি, তাই ব্যবসা নিয়েই এই ব্লগটি করা।

Related Articles

Back to top button