মহিলাদের জন্য ঘরে বসে ব্যবসা করার আইডিয়া
স্বামী কিংবা বাবাকে সহযোগিতা করার জন্য অনেক মেয়েরা ঘড়োয়া কাজের পাশাপাশি ব্যবসা করার সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে। এই লেখাটিতে মহিলাদের জন্য ঘরে বসে ব্যবসা আইডিয়া সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে।
নারী-পুরুষের সমান পরিশ্রমে এগিয়ে যাচ্ছে আমাদের এই পৃথিবী। আমাদের সমাজকে আরো উন্নত করতে নারী ও পুরুষ উভয়ের পরিশ্রম গুরুত্বপূর্ণ। তাইতো কবি বলেছেন বিশ্বের যা কিছু মহানসৃষ্টি চির কল্যাণকর, অর্ধেক তার করিয়াছেন নারী অর্ধেক তার নর।
এই উক্তি দ্বারা কবি বুঝিয়েছেন মানব সভ্যতাকে আরও উন্নত করায় নারী ও পুরুষ উভয়ের ভূমিকা থাকা প্রয়োজন। তাই আপনি যদি একজন নারী হয়ে থাকেন এবং ঘরে বসে ব্যবসায়ের মাধ্যমে টাকা উপার্জন করে নিজেকে/নিজেদের স্বাবলম্বী করতে চান, তাহলে এই লেখাটির মধ্যে দেখুন ইউনিক কিছু ব্যবসা আইডিয়া।
মহিলাদের জন্য ঘরে বসে ব্যবসা
সাধারণত মহিলারা ঘড়োয়া কাজের পাশাপাশি নিজেদের স্বাবলম্বী করার উদ্দেশ্যে ঘরে বসে ব্যবসা করতে চান। বর্তমানে মহিলাদের জন্য সব থেকে বেশি লাভজনক ব্যবসা আইডিয়া গুলো নিয়ে এই লেখাটিকে সাজানো হয়েছে।
ঘরে বসে ব্যবসা করতে হলে, প্রথমে আপনাকে কিছু টাকা ইনভেস্ট করতে হবে। এবং ব্যবসার পিছনে পর্যাপ্ত সময় ও মেধা অপচয় করলে অতি দ্রুত ভালো কিছু করা সম্ভব। যেহেতু বর্তমানে ইন্টারনেটের যুগ তাই আপনারা চাইলে অনলাইনের মাধ্যমেও অনেক ধরনের ব্যবসা পরিচালনা করতে পারেন।
ব্যবসা পরিচালনার জন্য প্রথমে আপনাকে “কি ব্যবসা করতে চান” এটা নির্ধারণ করতে হবে। এরপরে পর্যাপ্ত মূলধন গুছিয়ে এই ব্যবসা শুরু করতে হবে। অনলাইনের মাধ্যমে ব্যবসা করতে হলে আপনাকে একটি ফেসবুক পেইজ অথবা ওয়েবসাইট রেডি করতে হবে।
চলুন প্রথমে ব্যবসা আইডিয়াগুলো জেনে নেই এরপরে কিভাবে ব্যবসা শুরু করবেন, এবং ব্যবসায় লাভবান হওয়ার কিছু পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত জানানো হবে।
১.অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং সম্পর্কে আলোচনা করার আগে বলতে হবে এটি একটি অনলাইন ভিত্তিক ব্যবসা মাধ্যম। তথা অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং ফ্রিল্যান্সিং এর অন্তর্ভুক্ত। মহিলারা ঘরে বসে ইন্টারনেট ও কম্পিউটার ব্যবহার করে খুব সহজেই এই ব্যবসাটি পরিচালনা করতে পারবেন।
সম্পর্কিত কয়েকটি আর্টিকেলঃ
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং মূলত আপনার রেফারেন্সে কাস্টমাররা যদি কোন পণ্য ক্রয় করে তাহলে উক্ত অ্যাফিলিয়েট কোম্পানি প্রত্যেকটি পণ্য অনুযায়ী আপনাকে কমিশন দিবে। এই ব্যবসার ক্ষেত্রে মালামাল স্টক না করে একটি ওয়েবসাইট কিংবা ইউটিউব চ্যানেলের মাধ্যমে ব্যবসাটি পরিচালনা করতে পারবেন।
মনে করেন আপনি অ্যামাজনের কোন পণ্য অ্যাফিলিয়েট লিংক তৈরি করে ইউটিউব চ্যানেল অথবা ওয়েবসাইটের মাধ্যমে বিক্রি করলেন, তথা আপনার ওই লিংকের মাধ্যমে যত লোক ওই পণ্যটি ক্রয় করবে অ্যামাজন কোম্পানি কমিশন অনুযায়ী আপনাকে তত টাকা প্রদান করবে।
২.বিউটি পার্লারের ব্যবসা
বর্তমানে মহিলাদের ঘরে বসে লাভজনক ব্যবসা আইডিয়াগুলো আলোচনা করলে অবশ্যই বিউটি পার্লারের ব্যবসা প্রথম দিকে থাকবে। কেননা ইতিমধ্যে অনেক মেয়েরা ঘরেবসে এই ব্যবসাটি করে নিজেদের স্বাবলম্বী হিসেবে পরিচিত করিয়েছে।
যদি আপনার মেকাপ সম্পর্কে ধারণা থাকে তাহলে সামান্য কিছু টাকা ইনভেস্ট করে ঘরে বসে এই ব্যবসাটি করতে পারবেন। মেয়েদের সব থেকে পছন্দের বিষয় হলো মেকাপ করা। সৌন্দর্যের দিকে বেশি নজর দেওয়ার ফলে মেয়েরা ঘুরতে বের হলে অথবা কোন অনুষ্ঠানে যাওয়ার আগে বিউটি পার্লার থেকে মেকাপ করে।
আপনার যদি মেকাপ সম্পর্কে আইডিয়া থাকে তাহলে নিজেদের ঘরে একটি বিউটি পার্লার চালু করতে পারেন। এছাড়াও বিউটি পার্লার সম্পর্কে আইডিয়া অর্জন করার জন্য অনেক ট্রেনিং সেন্টার আছে, অথবা আপনারা যদি ৫ থেকে ৬ মাস কোন বিউটি পার্লারে চাকরি করেন তাহলে এই বিষয়ে সম্পূর্ণ আইডি অর্জন করতে পারবেন।
৩.আচার তৈরির ব্যবসা
আচার খেতে পছন্দ করেনা এমন লোক খুব কম খুঁজে পাওয়া যাবে। আপনি যদি বিভিন্ন ধরনের আচার কিংবা সস বানাতে পারদর্শী হন তবে এই ব্যবসাটি বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে শুরু করতে পারেনি। বর্তমানে বাংলাদেশে ছাড়িয়ে বিদেশেও আচারের বিপুল চাহিদা রয়েছে।
এই ব্যবসা শুরু করার জন্য তেমন কোন জায়গার প্রয়োজন হয় না, আপনি চাইলে ঘরে বসে ঘড়োয়া কাজের পাশাপাশি এই ব্যবসাটি পরিচালনা করতে পারবেন। আচার তৈরীর ব্যবসায় সফলতা অর্জনের জন্য অবশ্যই আপনাকে মজাদার আচার তৈরি করতে হবে।
৪.দর্জির ব্যবসা
এটি অনেক পুরনো ব্যবসা আইডিয়া, সাধারণত গ্রাম অঞ্চলে মহিলারা নিজেদের ঘরে বসে সাংসারিক কাজের পাশাপাশি এই ব্যবসাটি পরিচালনা করে। তবে বর্তমানে শহর অঞ্চলে দর্জির ব্যবসার প্রচলন অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। ইতিমধ্যে অনেকেই ঘরে বসে দর্জির ব্যবসা পরিচালনা করছে।
দর্জির ব্যবসা বলতে বুঝানো হয়েছে জামা কাপড় তৈরি করা, তথা আমরা মার্কেট থেকে একটি জামা কাপড় ক্রয় করে নিজেদের পছন্দ অনুযায়ী তৈরি করার জন্য একজন দর্জি প্রয়োজন হয়। যদি আপনার এই কাজের প্রতি অভিজ্ঞতা থাকে তাহলে সামান্য ইনভেস্টে এই ব্যবসা শুরু করতে পারেন।
সম্পর্কিত কয়েকটি আর্টিকেলঃ
৫.ক্রাফ্টিং ব্যবসার আইডিয়া
ক্রাফ্টিং প্রায় সকলেরই পছন্দ। ইতিমধ্যে এই ব্যবসাটি বিশ্ব দরবারে অনেক জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে এটি একটি ইউনিক ব্যবসা আইডিয়া হতে পারে। ক্রাফ্টিং সাধারণত মানুষ প্রিয়জনদের উপহারের উদ্দেশ্যে অথবা ঘর সাজানোর কাজে ব্যবহার করে।
ক্রাফ্টিং তৈরিতে আপনার বিশেষ দক্ষতা থাকলে সামান্য ইনভেস্টে এই ব্যবসা শুরু করতে পারেন। যদি এই ব্যবসা সম্পর্কে দক্ষতা নাথাকে তাহলে বিভিন্ন ট্রেনিং সেন্টার থেকে ক্রাফ্টিং বিষয়ে ট্রেনিং নিয়ে দক্ষতা অর্জন করতে পারেন।
জনপ্রিয় কয়েকটি ক্রাফ্টিং ব্যবসার আইডিয়াঃ
- কাগজ দিয়ে বিভিন্ন ধরনের শোপিস।
- ছবি আঁকা ও ফ্রেম তৈরি ইত্যাদি।
- জামার মধ্যে রঙ দিয়ে সুন্দর ডিজাইন।
- সেলাইয়ের সুন্দর ডিজাইন।
ইত্যাদি, আপনাদের সুবিধার্থে রবি টেন মিনিট স্কুলের ক্রাফ্টিং বিষয়ক একটি আর্টিকেলের লিংক শেয়ার করা হলো। এই আর্টিকেলটি দেখে ক্রাফ্টিং সম্পর্কে ধারণা অর্জন করতে পারবেন এবং বর্তমানে লাভজনক ক্রাফ্টিং ব্যবসার আইডিয়া সম্পর্কে জানতে পারবে।
FAQs
আচার তৈরি করা, বর্তমানে বাংলাদেশসহ পুরো পৃথিবীতে আচার অনেক জনপ্রিয়। আপনার যদি আচার তৈরিতে বিশেষ দক্ষতা থাকে তাহলে এই দক্ষতা পুঁজি করে খুব অল্প সময়ে একটি লাভজনক ব্যবসা দাঁড় করাতে পারবেন।
সোশ্যাল মিডিয়া সার্ভিস ব্যবসা, মাত্র ১০০০ টাকা ইনভেস্ট করে রিসেলার হিসেবে ফেসবুকে কিংবা ইনস্টাগ্রামে সোশ্যাল মিডিয়ার সার্ভিস ব্যবসা শুরু করতে পারেন।