Business idea

১০ হাজার টাকায় ২৫ টি ব্যবসার আইডিয়া ২০২৩

১০ হাজার টাকায় ২৫ টি ব্যবসার আইডিয়া সম্পর্কে অনেকে জানতে চেয়েছেন। এই লেখাটিতে আমরা মাত্র ১০ হাজার টাকায় শুরু করতে পারবেন এমন ২৫টি ইউনিক ব্যবসা আইডিয়া সম্পর্কে জানাবো।

যেহেতু আপনি গুগলে ব্যবসা সম্পর্কিত আর্টিকেল খুজতে ছিলেন, সেহেতু আপনি ব্যবসার মাধ্যমে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার চাচ্ছেন। আমাদের টিম আপনাকে সাধুবাদ জানায়। ব্যবসা করে আপনি খুব সহজেই নিজেকে স্বাবলম্বী করতে পারবেন।

তবে অনেক সময় আমাদের কাছে পর্যাপ্ত মূলধন না থাকায় আমরা ব্যবসা শুরু করতে পারি না। যাদের ব্যবসার মূলধন কম তাদের জন্য এই লেখাটি অনেক উপকারী। এই লেখাটিতে মাত্র ১০ হাজার টাকায় ২৫ টি ব্যবসার আইডিয়া সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে।

বিষয়বস্তুর সহজ সারণী

১০ হাজার টাকায় ২৫ টি ব্যবসার আইডিয়া

১০ হাজার টাকায় আপনি ছোট ছোট অনেকগুলো ব্যবসা শুরু করতে পারবেন। প্রাথমিক পর্যায়ে ছোট পরিসরে শুরু করলেও, ব্যবসার প্রতি যথেষ্ট সময় ব্যয় করে এবং যথেষ্ট পরিশ্রম করে ব্যবসাটি বড় পরিসরে গড়ে তুলতে পারবেন।

এই লেখাটিতে আমরা এমন ২৫টি ব্যবসা আইডিয়া সম্পর্কে আলোচনা করব, এগুলো আপনারা মাত্র ১০ হাজার টাকা মূলধন ইনভেস্ট করে শুরু করতে পারবেন। চলুন আজকের লেখাটির মূল বিষয় নিয়ে আলোচনা শুরু করি।

১.কাস্টমাইজ টি-শার্ট বিক্রি

প্রথমদিকে অল্প কিছু টাকা ইনভেস্ট করে এই ব্যবসাটি শুরু করতে পারবেন। ফেসবুকে একটি পেইজ তৈরি করে অথবা ২০০০ – ৩০০০ টাকা ইনভেস্ট করে একটি ওয়েবসাইট তৈরি করে, অনলাইনের মাধ্যমে কাস্টমাইজ টি-শার্ট বিক্রি করতে পারবেন।

প্রথমে কাস্টমারদের কাছ থেকে অর্ডার নিয়ে তাদের পছন্দের ডিজাইন প্রিন্টারের দোকান থেকে প্রিন্ট করে, আপনার প্রোফিট রেখে অনলাইনে কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে ডেলিভারি দিবেন। পরবর্তীতে পর্যাপ্ত মূলধন হলে নিজে একটি প্রিন্টিং মেশিন ক্রয় করে নিতে পারবেন।

২.জুসবার তৈরি

জুস এবং শরবত সকলের পছন্দের একটি পানীয়। এই গরমে ঠান্ডা শরবত বা জুসের চাহিদা অনেক বেশি। আপনার কাছে ১০,০০০ টাকা মূলধন থাকলে ছোট একটি জুসবার অথবা একটি ভ্যানে করে জুস বিক্রি করতে পারেন। জুসের পাশাপাশি ব্যবসা বৃদ্ধির লক্ষ্যে শরবত বিক্রি করতে পারেন।

প্রাথমিক পর্যায়ে একটি জুস ভ্যান ক্রয় করতে ৫০০০-৬০০০ টাকা প্রয়োজন হবে। বাকি টাকা দিয়ে অন্যান্য জুস সামগ্রী ক্রয় করে এই ব্যবসাটি শুরু করতে পারবেন। অল্প টাকার মধ্যে সেরা একটি ব্যবসা আইডিয়া এটি।

৩.অনলাইনে কাপড়ের ব্যবসা

একটি কাপড়ের দোকান তৈরি করতে অনেক টাকা প্রয়োজন হয় কিন্তু ঘরে বসে অনলাইনে কাপড় বিক্রি করতে খুব কম মূলধন প্রয়োজন। কেননা এখানে আপনাদের দোকান সাজানোর জন্য অনেক কাপড় ক্রয় করতে হয় না।

অল্প কিছু কাপড় পাইকারি দামে ক্রয় করে ফেসবুকের মাধ্যমে কাস্টমারদের কাছে বিক্রি করতে পারবেন। বিশেষ করে মহিলারা ঘরোয়া কাজের পাশাপাশি এই ব্যবসাটি পরিচালনা করতে পারবেন। মহিলাদের জন্য সেরা কিছু ব্যবসা আইডিয়া সম্পর্কে জানতে পারেন।

৪.সিজনাল ফলের ব্যবসা

আমাদের দেশে সারা বছর ফলের চাহিদা রয়েছে। বিভিন্ন সিজনে বিভিন্ন ধরনের ফল উৎপাদন হয়। আপনি গ্রাম থেকে সিজনাল ফলগুলো ক্রয় করে শহরে নিয়ে বেশি দামে বিক্রয় করতে পারবেন। অথবা অনলাইনের মাধ্যমেও ফলগুলো বিক্রয় করতে পারবেন।

যেমন আমের সিজনে অনেকেই গাছ পাকা আম খেতে পছন্দ করে। আপনি তাদের কাছে সরাসরি বাগান থেকে আম সংগ্রহ করে, বিক্রি করতে পারেন। এভাবে করে আপনি অল্প মূলধন দিয়ে একটি সিজনাল ফলের ব্যবসা শুরু করতে পারবেন।

৫.বায়োগ্যাস উৎপাদন

বাংলাদেশের পরিপ্রেক্ষিতে এই ব্যবসাটি সম্পূর্ণ ইউনিক। বর্তমানে গ্যাসের চাহিদা অনেক বেশি। আপনি বিভিন্ন গবাদি পশুর খামার থেকে বিভিন্ন জৈব উৎপাদন ও গোবর সংগ্রহ করতে পারেন। পরবর্তীতে এগুলো দিয়ে বায়োগ্যাস প্লান্ট এর মাধ্যমে গ্যাস উৎপাদন করতে পারবেন।

বায়োগ্যাস প্লান্ট তৈরির জন্য প্রয়োজন হবে একটি পানির ট্যাংক ও পাইপ এবং গ্যাস সাপ্লাইয়ের জন্য যথাযথ ব্যবস্থা করতে হবে। প্রথমবার একটি বায়োগ্যাস প্লান্ট তৈরি করে পরবর্তীতে কোন খরচ ছাড়াই শুধুমাত্র গোবর ও অন্যান্য জৈব উৎপাদন সংগ্রহ করে গ্যাস উৎপাদন করতে পারবেন।

৬.লন্ড্রি ও ওয়াশিং সার্ভিস

এই ব্যবসা শুরু করার জন্য একটি আয়রন মেশিন এবং ওয়াশিং সামগ্রী প্রয়োজন হবে। ১০,০০০ টাকা ইনভেস্ট করে এই সকল মালামালগুলো ক্রয় করতে পারবেন। এই ব্যবসাটি শুরু করা অনেক সহজ, শুধুমাত্র কাপড় ওয়াশিং করা সম্পর্কে ধারণা থাকতে হবে।

এই ব্যবসাটি পরিচালনা করার জন্য বাজারে কোন ধরনের দোকান তৈরির প্রয়োজন নেই, আপনার কাজের দক্ষতা ভালো থাকলে ঘরে বসে এই ব্যবসাটি পরিচালনা করতে পারবেন। বিশেষ করে মহিলারা অন্যান্য কাজের পাশাপাশি ঘরে বসে এই ব্যবসাটি করতে পারেন।

৭.কাগজের ব্যাগ তৈরি

পলিথিন আমাদের পরিবেশের জন্য অনেক ক্ষতিকর। যার কারণে বর্তমানে পলিথিন এর পরিবর্তে কাগজের ব্যাগ বেশি ব্যবহার হচ্ছে। ১০ হাজার টাকা ইনভেস্ট করে আপনি খুব সহজেই একটি কাগজের ব্যাগ তৈরির ব্যবসা শুরু করতে পারবেন।

এই ব্যবসা শুরু করার জন্য প্রাথমিক পর্যায়ে কিছু কাগজ এবং আটা ও কাগজ কাটার জন্য কাঁচি প্রয়োজন হবে। কাগজের ব্যাগ তৈরি করে নিকটস্থ বাজারের দোকানগুলোতে বিক্রয় করতে পারেন, অথবা চুক্তিভিত্তিক বিভিন্ন রেস্টুরেন্ট ও দোকানের কাগজের ব্যাগ তৈরি করে দিতে পারেন।

৮.কাপড় সেলাই বা দর্জির ব্যবসা

বর্তমান বাজারে একটি সেলাই মেশিনের দাম ৭০০০-৮০০০ টাকা মাত্র। আপনি কাপড় সেলাই বা দর্জির কাজে পারদর্শী হলে এই ব্যবসাটি শুরু করতে পারেন। ৭০০০-৮০০০ টাকা দিয়ে একটি সেলাই মেশিন ক্রয় করে, বাকি টাকা দিয়ে সেলাইয়ের জন্য সুতা ও অন্যান্য জিনিস ক্রয় করতে পারেন।

আপনারা চাইলে ঘরে বসেও এই ব্যবসাটি শুরু করতে পারেন। বিশেষ করে মেয়েরা, অন্যান্য কাজের পাশাপাশি কাপড় সেলাই বা দর্জির ব্যবসা করতে পারেন। এটা হতে পারে মেয়েদের জন্য সেরা ক্ষুদ্র ব্যবসা আইডিয়া

৯.ক্রাফট আইটেম তৈরীর ব্যবসা

আকর্ষণীয় গিফট কার্ড বা বক্স তৈরি করে বিক্রি করতে পারেন। বর্তমানে ক্রাফট আইটেম ও গিফট বক্স এর চাহিদা ব্যাপক। বিভিন্ন সময় ইউটিউবে ক্রাফটের ব্যবসা করে সফল হয়েছে এমন অনেক নিউজ দেখা যায়।

এটি তেমন কষ্টের কাজ নয়, আপনি ইউটিউবে ভিডিও দেখে অথবা সরাসরি কোন অভিজ্ঞ টিচারের কাছ থেকে এই কাজ শিখতে পারবেন। অফলাইনের পাশাপাশি অনলাইনে ফেসবুকে একটি পেজ ক্রিয়েট করে আপনার তৈরি ক্রাফট আইটেম ও গিফট গুলো বিক্রি করতে পারেন।

১০.ব্যবহৃত জিনিসপত্র ক্রয় বিক্র‍য়

এই ব্যবসায় আপনার কাজ হল মানুষের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে অথবা বিভিন্ন ফেসবুক গ্রুপ থেকে পুরনো ব্যবহৃত জিনিসপত্র গুলো ক্রয় করবেন, এবং একইভাবে বিভিন্ন গ্রুপগুলোতে অথবা নিজে একটি ওয়েবসাইট তৈরি করে এগুলো বিক্রি করবেন। এছাড়াওঃ

  • Bikroy.com;
  • Cellbazaar.com;
  • Clickbd.com;
  • Ebazar.com.bd;

এই সকল ওয়েবসাইটগুলোতে পুরনো মালামাল ক্রয় বিক্রয় করতে পারবেন। ১০ হাজার টাকা ইনভেস্ট করে প্রাথমিক পর্যায়ে এই ব্যবসাটি শুরু করতে পারেন। তবে পুরনো জিনিসপত্র ক্রয় বিক্রয়ের ক্ষেত্রে, আপনাকে সচেতন হতে হবে ও মার্কেট সম্পর্কে ধারণা রাখতে হবে।

১১.টিউশন সেন্টার তৈরি

আপনার শিক্ষাগত যোগ্যতা ভালো হলে, একটি টিউশন ব্যবসা শুরু করতে পারেন। বর্তমানে স্টুডেন্টরা স্কুল-কলেজের পড়ালেখার পাশাপাশি তাদের মেধা বিকাশের জন্য বিভিন্ন টিউশন সেন্টারে কোচিং করে। আপনি যেকোন বিষয়ে পারদর্শী হলে একটি টিউশন সেন্টার তৈরি করতে পারেন।

প্রাথমিক পর্যায়ে একটি টিউশন সেন্টার ভাড়া নিতে ৪০০০-৫০০০ টাকা প্রয়োজন হবে। তবে এই ব্যবসা শুরু করার জন্য আপনাকে যেকোনো একটি বিষয়ে অভিজ্ঞ থাকতে হবে এবং স্টুডেন্টদের সঠিকভাবে বোঝানোর যোগ্যতা রাখতে হবে।

১২.চা ও কফি স্টল

এটি অনেক পুরনো একটি ব্যবসা আইডিয়া, তবে আপনি এই আইডিয়াটিকে নতুনভাবে শুরু করতে পারেন। আপনার কাছে ১০,০০০ টাকা মূলধন থাকলে সুন্দরভাবে একটি চা ও কফির স্টল তৈরি করতে পারবেন।

আপনি একটি পার্কের সামনে অথবা লোকালয় পূর্ণ কোন স্থানে, ছোট একটি দোকান ভাড়া নিয়ে অথবা ভ্যানে করে চা এবং কফি বিক্রয় করতে পারেন। এর পাশাপাশি আপনার ব্যবসা বৃদ্ধির লক্ষ্যে বিস্কিট, চকলেট, টোস্ট, পানীয় দ্রাব্য, পান, সিগারেট ইত্যাদি বিক্রি করতে পারেন।

১৩.ন্যাচারাল বিউটি প্রোডাক্ট উৎপাদন

গুণগত মানসম্পন্ন এবং পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া মুক্ত ন্যাচারাল বিউটি প্রোডাক্ট উৎপাদন করে ইতিমধ্যে অনেকেই সফল ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত আছে। অনলাইনে বেশ চাহিদা রয়েছে এই প্রোডাক্ট গুলির। ১০ হাজার টাকায় আপনি ছোট পরিসরে এই ব্যবসাটি শুরু করতে পারেন।

যদি নিজে প্রোডাক্ট উৎপাদন করতে ব্যর্থ হন তাহলে অন্যান্য কোম্পানির প্রোডাক্টগুলো পাইকারি দামে ক্রয় করে এনে ফেসবুকে একটি পেজ তৈরি করে, অনলাইন মার্কেটিং এর মাধ্যমে কাস্টমারদের কাছে বিক্রি করতে পারেন।

১৪.হাঁস-মুরগি পালন

আপনি যদি গ্রামে বসবাস করেন সেক্ষেত্রে এই ব্যবসাটি হতে পারে আপনার জন্য একটি লাভজনক ব্যবসা। মাত্র ১০ হাজার টাকা ইনভেস্ট করে আপনি একটি হাঁস-মুরগির খামার তৈরি করতে পারবেন। বাজারে হাঁস মুরগির চাহিদা বেশি থাকায়, এই ব্যবসায় ব্যাপক লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

এজন্য প্রথমে একটি ঘর নির্বাচন করতে হবে, তারপরে কিছু উন্নত জাতের হাঁস বা মুরগির ছানা ক্রয় করে সঠিকভাবে পরিচর্যা করে এগুলো বড় করতে হবে। এরপরে বিক্রির উপযোগী হলে ন্যায্য দামে এগুলোকে বাজারে বিক্রি করতে হবে।

১৫.নকশি কাঁথা সেলাই

বহু যুগ আগে থেকেই আমাদের দেশে নকশি কাঁথার প্রচলন শুরু হয়েছে। আমাদের দেশে তৈরি নকশি কাঁথাগুলো বিদেশেও অনেক জনপ্রিয়। সাধারণ কাঁথার উপরে বিভিন্ন ধরনের ডিজাইন করাকে নকশি কাঁথা বলা হয়।

আপনার যদি নকশী কাঁথা সেলাইয়ে দক্ষতা থাকে সেক্ষেত্রে খুব সহজেই এই ব্যবসাটি শুরু করতে পারেন। প্রাথমিক পর্যায়ে নকশি কাঁথার কাপড় ও সুতা ক্রয়ের জন্য ২০০০ থেকে ৩০০০ টাকা প্রয়োজন হবে। আপনার তৈরি নকশি কাঁথাগুলো পাইকারি দামে বিভিন্ন দোকানে অথবা অনলাইনে বিক্রি করতে পারেন।

১৬.পুরনো বই বিক্রি

এই ব্যবসাটি তেমন পরীক্ষিত নয়, আমার কাছে মনে হয়েছে আপনি যদি এই ব্যবসাটি করেন সেক্ষেত্রে প্রতি মাসে ভালো পরিমাণে প্রফিট অর্জন করতে পারবেন। বিভিন্ন জায়গা থেকে পুরনো বইগুলো সংগ্রহ করে বিক্রয় করা আপনার মূল কাজ।

এটা হতে পারে স্কুল বা কলেজের কোন বই অথবা হতে পারে বিভিন্ন ধরনের উপন্যাস, গল্পের বই ইত্যাদি। অনেকে পুরনো বই ক্রয়ের জন্য আগ্রহ পোষণ করে, তাদের চাহিদার কথা বিবেচনা করে এবং নিজেদের ব্যবসা হিসেবে পুরনো বই বিক্রি করতে পারেন।

১৭.মাশরুম চাষ করা

মাশরুম অন্তত পুষ্টিকর ও সুস্বাদু একটি খাবার। ইতিমধ্যে অনেক ব্যবসায়ী মাশরুম চাষে সফলতা অর্জন করেছে। প্রাথমিক পর্যায়ে ছোট পরিসরে ১০ হাজার টাকা ইনভেস্ট করে এই ব্যবসাটি শুরু করতে পারবেন।

মাশরুম চাষের উপর সরকারি ও বেসরকারি অনেক ট্রেনিং সেন্টার আছে। আপনি চাইলে এখান থেকে মাশরুম চাষ সম্পর্কে ধারণা অর্জন করে, আপনার বাড়িতে পড়ে থাকা জমিতে মাশরুম চাষ করে অল্প পুঁজি দিয়ে নিজের ব্যবসাটি শুরু করতে পারেন।

১৮.ঘরে তৈরি পিঠাপুলি বিক্রি

ঘরে তৈরি পিঠাপুলি গুলো বিক্রির অন্যতম একটি বড় সেক্টর হল অনলাইন। আপনি সুস্বাদু পিঠেপুলি তৈরিতে অভিজ্ঞ হলে, এগুলো তৈরি করে অনলাইনের মাধ্যমে প্রচুর পরিমাণে বিক্রয় করতে পারবেন। এছাড়াও অনলাইনের পাশাপাশি অফলাইনে বিভিন্ন দোকানে এগুলো পাইকারি দামে বিক্রয় করতে পারেন।

তবে আপনার তৈরি পিঠাপুলি গুলো অবশ্যই সুস্বাদু ও ভেজালমুক্ত হতে হবে। অন্যান্য কাজের পাশাপাশি ঘরে বসে মেয়েরা এই ব্যবসাটি করতে পারেন। এই ব্যবসাটির জন্য প্রাথমিক পর্যায়ে ৫০০০ – ৭০০০ টাকা ইনভেস্ট করা যথেষ্ট।

১৯.বিউটি পার্লারের ব্যবসা

মেকআপ সম্পর্কে দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা থাকলে স্বল্প খরচে ছোট পরিসরে একটি বিউটি পার্লারের ব্যবসা শুরু করতে পারেন। পার্লারের জন্য আলাদা স্থান না তৈরি করে, আপনার বাড়িতে থাকা অবশিষ্ট কোন রুমে পার্লার তৈরি করতে পারেন।

এতে আপনার খরচ বেঁচে যাবে। প্রাথমিক পর্যায়ে ১০,০০০ টাকা দিয়ে কিছু মেকআপ সামগ্রিক ক্রয় করে এই ব্যবসাটি শুরু করতে পারেন। বর্তমানে বিউটি পার্লারের ব্যবসা অনেক লাভজনক ও জনপ্রিয়। নির্দিষ্ট স্থানে বসে সেবা দেওয়ার পাশাপাশি কাস্টমারদের বাড়িতে গিয়ে বিউটি পার্লারের সেবা প্রদান করতে পারেন।

২০.ডিজিটাল মার্কেটিং এজেন্সি তৈরি

অফলাইনের পাশাপাশি বর্তমানে অনলাইন ব্যবসায়ও ব্যাপক বিপ্লব ঘটেছে। আপনি ১০ হাজার টাকা ইনভেস্ট করে প্রথমে একটি ডিজিটাল মার্কেটিং এর কোর্স ক্রয় করে, ডিজিটাল মার্কেটিং সম্পর্কে অভিজ্ঞ হয়ে, একটি অনলাইন ডিজিটাল মার্কেটিং সেবা এজেন্সি তৈরি করতে পারেন।

ডিজিটাল মার্কেটিং এর একটি কোর্স সম্পূর্ণ করতে আপনার ৫০০০ থেকে ৭০০০ টাকা প্রয়োজন হবে। বাকি টাকা দিয়ে আপনারা ফেসবুকে একটি পেজ তৈরি করবেন এবং একটি ওয়েবসাইট তৈরি করবেন। এরপরে অনলাইনের মাধ্যমে মার্কেটিং করে, কাস্টমার খুঁজতে পারবেন।

২১.ভিডিও এডিটিং এজেন্সি তৈরি

আগামীতে সব থেকে সম্ভাবনাময় সেক্টরগুলোর মধ্যে ভিডিও এডিটিং অন্যতম। আপনার কাছে যদি এখন ১০ হাজার টাকা থাকে, তাহলে এখনই একটি ভিডিও এডিটিং কোর্সে ভর্তি হয়ে যান। আগামী ১ বছর সময় নিয়ে সঠিকভাবে কোর্সটি সম্পূর্ণ করে, ভিডিও এডিটিংয়ে নিজের দক্ষতা বৃদ্ধি করুন।

এরপরে ভিডিও এডিটিং সেক্টর নিয়ে বিভিন্ন মার্কেটপ্লেস গুলোতে কাজের পাশাপাশি অনলাইনে নিজে একটি এজেন্সি দাঁড় করাতে পারেন। একটি এজেন্সি দাঁড় করাতে একটি ফেসবুক পেজ ও একটি ওয়েবসাইট যথেষ্ট।

২২.এসএমএম প্যানেলের ব্যবসা

এসএমএম প্যানেলের কাজ হল বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া সার্ভিস প্রদান করা। এরমধ্যে ফেসবুক লাইক ও ফলোয়ার, ইনস্টাগ্রাম এর সকল সার্ভিস, টুইটারের সকল সার্ভিস, ইউটিউবে সকল সার্ভিস (যেমন ইউটিউব সাবস্ক্রাইবার, ভিউয়ার্স, ওয়াচ টাইম, কমেন্ট, লাইক) ইত্যাদি।

প্রথমদিকে ৩০০০ – ৪০০০ হাজার টাকা ইনভেস্ট করে একটি এসএমএম প্যানেল ওয়েবসাইট তৈরি করে নিতে পারবেন। এরপরে সোশ্যাল মিডিয়ায় মার্কেটিং এর মাধ্যমে আপনার এসএমএস প্যানেল ওয়েবসাইট থেকে বিভিন্ন ধরনের সোশ্যাল মিডিয়া সার্ভিস গুলো বিক্রি করতে পারেন।

এসএমএম প্যানেল পরিচালনা করতে আপনার ওয়েবসাইট সম্পর্কে ধারণা থাকতে হবে না। যেহেতু বেশিরভাগ এসএমএম প্যানেলগুলো পিএইচপি লারাভেল স্ক্রিপ্টে তৈরি, সেহেতু অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়ার মতো খুব সহজেই এগুলো পরিচালনা করতে পারবেন।

২৩.ফুলের ব্যবসা করা

ফুল একটি সৌখিন জিনিস যেটা সকলের পছন্দ। আমাদের দেশে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ফুলের ব্যবহার রয়েছে। তাই প্রতিনিয়ত ফুলের চাহিদা অনেক বৃদ্ধি পাচ্ছে। আপনার কাছে ১০,০০০ টাকা মূলধন থাকলে একটি ফুলের ব্যবসা শুরু করতে পারেন।

ভ্যানে করে অথবা শহরের মধ্যে ছোট্ট একটি দোকান ভাড়া রেখে এই ব্যবসাটি শুরু করতে পারবেন। ফুলের ব্যবসা করার নিয়ম লেখাটি দেখে কিভাবে ফুলের ব্যবসা শুরু করবেন, কোথা থেকে ফুল সংগ্রহ করবেন, এই ব্যবসা সম্পর্কে খুঁটিনাটি জানতে পারেন।

২৪.মৌমাছি পালন

বর্তমান সময়ে মধু উৎপাদন হতে পারে একটি লাভজনক ব্যবসা। আপনি ৪০০০-৫০০০ হাজার টাকা ইনভেস্ট করে মৌমাছি ক্রয় করে আনতে পারবেন। এরপরে বাকি টাকা দিয়ে অন্যান্য ব্যবসার উপাদান ক্রয় করে মৌমাছি পালন তথা মধু উৎপাদন ব্যবসা শুরু করতে পারেন।

মধু একটি সুস্বাদু ও পুষ্টিগুণ সম্মত খাবার, তাই বাজারে এর চাহিদা ব্যাপক। খাঁটি মধু উৎপাদন করে বেশ ভালো দামে অনলাইনে ও অফলাইনে বিক্রয় করতে পারেন। পাশাপাশি দারাজে সেলার একাউন্ট করে, আপনার উৎপাদন করা মধুগুলো দারাজেও বিক্রয় করতে পারেন।

২৫.ঠিকাদারি ব্যবসা

১০ হাজার টাকায় ২৫ টি ব্যবসার আইডিয়া তালিকার সর্বশেষ ব্যবসা আইডিয়াটি হল ঠিকাদারি ব্যবসা। এই ব্যবসায় আপনার কাজ হল গ্রাম থেকে কিছু শ্রমিক নিয়ে একটি টিম গঠন করে, শহরে বিভিন্ন মানুষের প্রয়োজনীয় কাজ করে দেয়া।

সাধারণত ঠিকাদারি ব্যবসাকে কন্টেক্টারি ব্যবসা বলা হয়। প্রথমদিকে এই ব্যবসা শুরু করার জন্য তেমন ইনভেস্ট করার প্রয়োজন নেই। শুধুমাত্র নিজের বুদ্ধিমত্তা ও বিচক্ষণতা কাজে লাগিয়ে এই ব্যবসাটি শুরু করতে পারেন।

শেষকথা

সম্মানিত পাঠকবৃন্দ, আজকের লেখাটি এখানেই সমাপ্ত ঘোষণা করছি। আশাকরি বর্তমান সময়ের লাভজনক ১০ হাজার টাকায় ২৫ টি ব্যবসার আইডিয়া সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন। উপরে উল্লেখিত ব্যবসা আইডিয়া গুলোর মধ্য থেকে যেকোনো ব্যবসা ১০,০০০ টাকায় শুরু করতে পারবেন।

উল্লেখিত ২৫টি ব্যবসা আইডিয়ার মধ্যে, আপনার কাছে কোন ব্যবসা আইডিয়াটি সেরা মনে হয়েছে এবং আপনি কোন ব্যবসাটি শুরু করতে চাচ্ছেন তা অবশ্যই কমেন্টের মাধ্যমে আমাদের জানাবেন।

আপনাদের মন্তব্যের কারণে পরবর্তীতে ব্যবসা সম্পর্কিত আর্টিকেল নিয়ে আসতে আমরা আগ্রহ প্রকাশ করব।

FAQs

কম পুঁজিতে কী কী ব্যবসা করা যেতে পারে?

কম পুঁজি দিয়ে আপনারা ঘরে বসে পিঠাপুলি তৈরি করে বাজারে বিক্রি করতে পারেন, অথবা একটি কাপড় সেলাই এর মেশিন ক্রয় করে দর্জির কাজ করতে পারেন।

কম বাজেটে কয়েকটি ব্যবসা আইডিয়া?

আপনি যদি গ্রামে বসবাস করেন সেক্ষেত্রে কম বাজেটে হাঁস-মুরগি পালনের ব্যবসা শুরু করতে পারেন। অথবা কম পুঁজি দিয়ে সিজনাল ফলের ব্যবসা শুরু করতে পারেন, এটি অনেক লাভজনক।

Business Of BD

হাই,ব্যবসা নিয়েই আমার পড়াশোনা এবং ব্যবসা নিয়েই আমার ক্যারিয়ার। ব্যবসা নিয়ে লিখতে ভালবাসি, তাই ব্যবসা নিয়েই এই ব্লগটি করা।

Related Articles

Back to top button