উৎপাদনমুখী ব্যবসার আইডিয়া | Manufacturing Business Ideas
একটি দেশের অর্থনীতি শক্তিশালী করতে উৎপাদন শিল্পের ব্যাপক ভূমিকা থাকে। এই লেখাটিতে আমরা লাভজনক কয়েকটি উৎপাদনমুখী ব্যবসার আইডিয়া সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করবো।
নিজেকে সফল উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তুলতে উৎপাদনমুখী ব্যবসা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এই ব্যবসায় আপনি যেকোনো কিছু তৈরি করে বিক্রির মাধ্যমে নিজেকে সাবলম্বী করার পাশাপাশি দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারবেন।
নিজেদের ভাগ্য বদল করতে আমরা চাইলে একটি উৎপাদন মুখী ব্যবসা শুরু করতে পারি। অনেকে মনে করি উৎপাদন মুখী ব্যবসা শুরু করতে অনেক পুঁজি প্রয়োজন হয়। কিন্তু আমাদের এই ধারণা সম্পূর্ণ ভুল।
অল্প পুঁজি দিয়েও আমরা উৎপাদন মুখী ব্যবসা শুরু করতে পারি। এই লেখাটি সম্পূর্ণ দেখার জন্য অনুরোধ করা হলো। এই লেখাটিতে বর্তমান সময়ের লাভজনক কিছু উৎপাদনমুখী ব্যবসার আইডিয়া সম্পর্কে আলোচনা করা হবে।
উৎপাদনমুখী ব্যবসার আইডিয়া
হাজারো ব্যবসা আইডিয়ার মধ্যে সবথেকে সম্মানজনক ও লাভজনক ব্যবসা আইডিয়া গুলোর মধ্যে অন্যতম হলো উৎপাদনমুখী ব্যবসা। আপনারা চাইলে অল্প পুঁজি দিয়ে এই ব্যবসা শুরু করতে পারেন। তবে ব্যবসার শুরুতে কঠোর পরিশ্রম ও উপরওয়ালার প্রতি ভরসা রাখতে হবে।
তাহলে ইনশাআল্লাহ আপনি অতি দ্রুত সফল হবেন। উৎপাদনমুখী ব্যবসা আমাদের দেশের অর্থনীতিতে ব্যাপক ভূমিকা রাখে, যা একজন উদ্যোক্তা হিসেবে আমাদের গর্বের বিষয়। চলুন আজকের লেখাটির মূল পর্ব শুরু করি।
১.জৈব সার তৈরির ব্যবসা
বাংলাদেশ একটি কৃষি প্রধান দেশ। আমাদের দেশের ৫০ শতাংশ মানুষ কৃষির সাথে জড়িত। আধুনিক কৃষিতে রাসায়নিক সারের পাশাপাশি জৈব সার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আপনার কাছে পর্যাপ্ত সময় ও মূলধন থাকলে একটি জৈব সার তৈরীর ব্যবসা শুরু করতে পারেন।
ঘরোয়া পরিবেশে তথা নিজেদের বাড়িতে বসে গোবর, মাটি, খরকুটো দিয়ে বিভিন্ন ধরনের জৈব সার তৈরি করে কৃষকদের কাছে বিক্রি করতে পারেন। এছাড়াও বিভিন্ন নার্সারিতে চারা উৎপাদনের জন্য জৈব সার প্রয়োজন হয়।
২.কাঠের জিনিসপত্র তৈরি
আমাদের দেশে কাঠের জিনিসপত্র গুলোর আলাদা কদর রয়েছে। আমরা বিভিন্ন কাজে কাঠের জিনিসপত্র ব্যবহার করি। যেমন: ঘর সাজানোর কাজে, ঘরের আসবাবপত্র হিসেবে কাঠ ব্যবহার করে। কাঠের জিনিসপত্র তৈরিতে দক্ষতা থাকলে এই ব্যবসাটি শুরু করতে পারেন।
অথবা আপনার কাছে পর্যাপ্ত মূলধন থাকলে একজন কাঠমিস্ত্রির সাথে চুক্তি করে এই ব্যবসাটি শুরু করতে পারেন। বর্তমানে কাঠের জিনিসপত্রের চাহিদা অনেক যার কারণে বাজারে এর অনেক বেশি কদর রয়েছে।
৩.মধু উৎপাদন ব্যবসা
মৌমাছি পালন করে মধু উৎপাদনের ব্যবসাটি বেশ পুরনো। তবে বর্তমানে আমাদের দেশে মধু উৎপাদনের উপরে বেশ কিছু প্রশিক্ষণ কেন্দ্র গড়ে উঠেছে, যার ফলে নতুন উদ্যোক্তারা এই কাজের দিকে অগ্রসর হচ্ছে।
মৌমাছি পালন করে মধু উৎপাদন করে অনলাইনে ও অফলাইনে বিক্রি করতে পারেন। ১০০% খাঁটি মধুর চাহিদা অনেক। অল্প কিছু টাকা বিনিয়োগ করে আপনারা এই ব্যবসাটি শুরু করতে পারবেন। তবে এই ব্যবসা করার জন্য আপনাকে পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ গ্রহণ করতে হবে।
৪.রাবারের কার্পেট ও পাপোশ তৈরির ব্যবসা
অফিস আদালত ও বাড়ি ঘড়ে রাবারের কার্পেট বা পাপোশের বেশ চাহিদা রয়েছে। ভালো মানের ও আধুনিক ডিজাইনের কার্পেট বা পাপোশ তৈরি করতে পারলে আপনি রাতারাতি একজন সফল উদ্যোক্তা হিসেবে নিজেকে পরিচিত করাতে পারবেন।
তবে এই ব্যবসাটি শুরু করার জন্য আপনাকে এই বিষয়ের উপরে ট্রেনিং গ্রহণ করতে হবে এবং কিছু জিনিসপত্র বা মেশিনারি ক্রয় করতে হবে। সাধারণভাবে একটি কার্পেট ও পাপোশ তৈরির ব্যবসা শুরু করতে কমপক্ষে ১,০০,০০০ থেকে ২,৫০,০০০ টাকা ইনভেস্ট করতে হবে।
সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ আর্টিকেলঃ লস ছাড়া ব্যবসা করার আইডিয়া।
৫.বাচ্চাদের খেলনা তৈরির ব্যবসা
একটি বিশাল সম্ভাবনাময় ব্যবসার আইডিয়া হচ্ছে বাচ্চাদের খেলনা তৈরি ব্যবসা। এই ব্যবসার চাহিদা কখনোই কমবে না। আপনি ঘরে বসে প্রাথমিক পর্যায়ে এই ব্যবসাটি শুরু করতে পারেন। প্রথমদিকে কাপড় বা কাগজ দিয়ে বিভিন্ন ধরনের টেডি বিয়ার ও খেলনা তৈরি করে এগুলো বিক্রি করতে পারেন।
অথবা পর্যাপ্ত মূলধন থাকলে একটি অটোমেটিক মেশিন ক্রয় করে প্লাস্টিক দিয়ে বিভিন্ন ধরনের আকর্ষণীয় খেলনা তৈরি করতে পারেন। তবে বিভিন্ন ধরনের অটোমেটিক মেশিনারি ক্রয়ের জন্য অনেক টাকা ইনভেস্ট করতে হবে।
৬.জ্যাম ও জেলি তৈরির ব্যবসা
মাত্র ২০,০০০ থেকে ৫০,০০০ টাকা ইনভেস্ট করে এই ব্যবসাটি শুরু করতে পারবেন। আপনার ভিতরে জ্যাম ও জেলি সম্পর্কে সামান্য আইডিয়া থাকলে বাকিটা ইউটিউব দেখে এগুলো তৈরি শিখতে পারেন। অথবা বিভিন্ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থেকে জ্যাম ও জেলি তৈরির প্রশিক্ষণ গ্রহণ করতে পারেন।
ঘরে বসে জ্যাম অথবা জেলি তৈরি করে এগুলো পাইকারি দামে দোকানদারদের কাছে বিক্রি করতে পারেন অথবা অনলাইনে ফেসবুকে একটি পেজ ক্রিয়েট করে সরাসরি কাস্টমারদের কাছে বিক্রি করতে পারেন।
৭.বিস্কুট ও টোস্ট তৈরির ব্যবসা
প্রতিদিন সকালে ১ কাপ চায়ের সাথে ২ টুকরো বিস্কুট না হলে আমাদের সকাল শুরু হয় না। আমরা উৎপাদন মুখী ব্যবসা হিসেবে বিস্কুট ও টোস্ট তৈরির ব্যবসাকে পছন্দ করতে পারি। এই ব্যবসাটি স্বল্প পুঁজিতে প্রাথমিক পর্যায়ে ঘরে বসে শুরু করতে পারবেন।
বিস্কুট ও টোস্ট তৈরির কাজ জানা না থাকলে, আপনি সম্পূর্ণ ফ্রিতে ইউটিউব দেখে এই কাজগুলো শিখে নিতে পারেন। এরপরে মজাদার বিস্কুট বা টোস্ট তৈরি করে আপনার এলাকার দোকানগুলোতে পাইকারি দামে বিক্রি করতে পারবেন।
শেষকথা
সম্মানিত পাঠকবৃন্দ উৎপাদনমুখী ব্যবসার আইডিয়া লেখাটি এখানেই সমাপ্ত ঘোষণা করছি। আশা করি আপনারা উৎপাদনমুখী কয়েকটি লাভজনক ব্যবসার আইডিয়া সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। নতুন নতুন ব্যবসা আইডিয়াগুলো সম্পর্কে জানতে পারবেন আমাদের ওয়েবসাইট থেকে।
FAQs
কম টাকার মধ্যে মাটির হাড়ি পাতিল তৈরি এবং বিস্কুট ও টোস্ট তৈরির ব্যবসা শুরু করতে পারেন। বর্তমানে লাভজনক উৎপাদন্মুখী ব্যবসা গুলোর মধ্যে মাটির হাড়ি পাতিল তৈরি ও বিস্কুট তৈরির ব্যবসা অন্যতম।
৫০০০ টাকায় লাভজনক উৎপাদনমুখী ব্যবসা হল আচার তৈরীর ব্যবসা। বর্তমানে সুস্বাদু বিভিন্ন ধরনের আচারের বেশ চাহিদা রয়েছে।