Business idea

10 হাজার টাকায় ব্যবসা আইডিয়া

বর্তমানে আপনি মাত্র 10 হাজার টাকায় ব্যবসা শুরু করতে পারবেন। এই লেখাটিতে আমরা বর্তমান সময়ে লাভজনক কয়েকটি ব্যবসা, যেগুলো মাত্র ১০ হাজার টাকা ইনভেস্ট করে শুরু করতে পারবেন। এমন কিছু ব্যবসা আইডিয়া সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব।

সাধারণত স্টুডেন্টদের ক্ষেত্রে কিংবা বেকারদের ক্ষেত্রে ব্যবসা শুরু করার মূলধন অনেক কম থাকে। আপনার কাছে যদি সর্বনিম্ন ১০ হাজার টাকা থাকে, তাহলে এই টাকা দিয়ে একটি ব্যবসা শুরু করতে পারেন।

10 হাজার টাকায় ব্যবসা

১০ হাজার টাকার লাভজনক ব্যবসা আইডিয়াগুলো সম্পর্কে নিচে বিস্তারিত বর্ণনা করা হবে। আপনি চাইলে এই ব্যবসা গুলো চাকরির পাশাপাশি অথবা আপনার অবসর সময়কে কাজে লাগিয়ে শুরু করতে পারেন। প্রথমদিকে ১০ হাজার টাকা ইনভেস্ট করে ব্যবসা শুরু করবেন।

আস্তে আস্তে আপনার ব্যবসার পরিধি বৃদ্ধি পাওয়ার সাথে সাথে ব্যবসার মূলধন বৃদ্ধি করবেন। এতে করে ব্যবসা সম্পর্কে আপনার পরিপূর্ণ জ্ঞান তৈরি হবে এবং ব্যবসায়ের মার্কেট সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন। এই ব্যবসা গুলো আপনারা পার্ট টাইম ও ফুল টাইম হিসেবে শুরু করতে পারেন।

১.জুস স্টল তৈরি

বর্তমানে এই ব্যবসাটি ৯০% ইউনিক। বিভিন্ন বড় বড় রেস্টুরেন্টে ফলের তৈরি জুস পাওয়া গেলেও বাংলাদেশ ও ইন্ডিয়ায় জুস স্টল খুবই কম পাওয়া যায়। একটি ভ্যানে করে juice stall বা শরবতের দোকান লাগিয়ে শহরের কোন লোকালয়ে স্থানে বসে এই ব্যবসাটি পরিচালনা করতে পারবেন।

এই ব্যবসা শুরু করার জন্য ১০ হাজার টাকা মূলধন যথেষ্ট, এরপরেও আপনি চাইলে বেশি টাকা ইনভেস্ট করতে পারেন। বিশেষ করে গরমের সিজনে এই ব্যবসাটি অনেক বেশি জনপ্রিয় হয়। গরমের সিজনে আপনি ভ্যানে করে যেকোনো লোকালয় স্থানে বসে juice stall বা শরবতের দোকান ব্যবসাটি করতে পারবেন।

২.কাস্টম গিফট শপ তৈরি

এটিও একটি ইউনিক ব্যবসা আইডিয়া। বিভিন্ন ধরনের আকর্ষণীয় গিফট ও শপিস গুলো অনলাইনে কিংবা অফলাইনে একটি দোকান রেখে ব্যবসা শুরু করতে পারেন। এই ব্যবসা শুরু করার জন্য প্রথম দিকে ১০ হাজার টাকা মূলধন যথেষ্ট।

কমবেশি সকলেই তার প্রিয়জন কিংবা আত্মীয়-স্বজনদের গিফট দিতে পছন্দ করে। আপনি যদি একটি কাস্টম গিফট শপ ব্যবসা শুরু করতে পারেন, তাহলে বলা যায় এই যুগে ব্যবসাটি অনেক জনপ্রিয় হবে। যদি দোকান তৈরীর সুযোগ না থাকে তাহলে অনলাইনেই এই ব্যবসাটি পরিচালনা করতে পারেন।

৩.কাগজের ঠোঙ্গা বা ব্যাগ তৈরি

আমরা সকলেই জানি প্লাস্টিক কিংবা পলিথিন আমাদের পরিবেশের জন্য ব্যাপক ক্ষতিকর। প্লাস্টিক কিংবা পলিথিনের বিপরীত হিসেবে আমরা কাগজের ঠোঙ্গা বা ব্যাগ ব্যবহার করতে পারি। আপনার যদি এগুলো তৈরিতে দক্ষতা থাকে তাহলে একটি লাভজনক ব্যবসা শুরু করতে পারেন।

১০ হাজার টাকা দিয়ে কাগজের ঠোঙ্গা বা ব্যাগ তৈরির ব্যবসা শুরু করতে পারবেন। ব্যাগ ও ঠোঙ্গা ছাড়াও কাগজ দিয়ে বিভিন্ন ধরনের খাম ও শোপিস তৈরি করতে পারেন। এগুলো বিভিন্ন মুদি দোকান কিংবা রেস্টুরেন্টে সাপ্লাই দিয়ে অনেক টাকা ইনকাম করতে পারবেন। এই সকল জিনিসপত্র গুলো তৈরীর জন্য কোন ধরনের মেশিনারি প্রয়োজন নেই।

৪.অনলাইনে এজেন্সি তৈরি করা

বর্তমানে বাংলাদেশে ও ইন্ডিয়ায় ফ্রিল্যান্সিং অনেক জনপ্রিয়। আপনার যদি ফ্রিল্যান্সিং এর কোন সেক্টরে দক্ষতা থাকে তাহলে একটি অনলাইন এজেন্সি তৈরি করতে পারেন। বিভিন্ন দেশে অনলাইন এজেন্সির চাহিদা ব্যাপক। মনে করেন আপনি ডিজিটাল মার্কেটিং এ পারদর্শী।

তাহলে আপনি ডিজিটাল মার্কেটিং এর উপরে একটি এজেন্সি দাঁড় করাতে পারেন। একটি এজেন্সি তৈরি করার জন্য সবথেকে বেশি প্রয়োজন হবে একটি ওয়েবসাইট ও ফেসবুক পেইজ। যেগুলো তৈরি করতে ১০ হাজার টাকার প্রয়োজন নেই। এভাবে আপনার দক্ষতা অনুযায়ী যেকোন বিষয়ের উপরে একটি অনলাইন এজেন্সি দাঁড় করাতে পারবেন।

যেমন বর্তমানে বাংলা কনটেন্ট রাইটিং এর ক্ষেত্রে Writealoy অনেক জনপ্রিয় হয়েছে। ঠিক তেমনিভাবে আপনারা একটি এজেন্সি তৈরি করে আপনার ব্যবসা শুরু করতে পারেন।

৫.পাইকারি চায়ের ব্যবসা

এখানে চায়ের ব্যবসা বলতে কোন ধরনের স্টল বা দোকানের কথা বুঝানো হয়নি। যেসকল স্থানে চা পাতা থেকে চা তৈরি করা হয়, ওই সকল স্থান থেকে অল্প দামে চা ক্রয় করে এনে দোকানদারের কাছে পাইকারি বিক্রি করা। এই ব্যবসাটি আপনারা ১০ হাজার টাকায় শুরু করতে পারবেন।

শুরুর দিকে আপনার এলাকার ৫ থেকে ১০ টি চায়ের দোকানে পাইকারি চা বিক্রি শুরু করুন। এরপরে আস্তে আস্তে আপনার ব্যবসার পরিধি অনুযায়ী এলাকার বা এলাকার বাহিরের অন্যান্য চায়ের দোকানগুলোতে চা সাপ্লাই দেয়া শুরু করতে পারেন।

৬.ফুলের ব্যবসা করা

আমাদের দেশে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ফুলের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। আপনার কাছে যদি পর্যাপ্ত মূলধন ও প্রপার আইডিয়া থাকে তাহলে একটি ফুলের ব্যবসা শুরু করতে পারেন। পূর্বের থেকে বর্তমানে ফুলের ব্যবসায় লাভ বেশি, কেননা আপনি বিভিন্ন মেডিসিন এর মাধ্যমে ফুল বেশিদিন তাজা রাখতে পারবেন।

ফুলের ব্যবসা করার নিয়ম সম্পর্কে জেনে, ও পর্যাপ্ত মূলধন নিয়ে এই ব্যবসাটি শুরু করতে পারেন। প্রথমদিকে ভ্যানে করে ফুল বিক্রির পাশাপাশি অনলাইনে ফুল বিক্রি করতে পারেন। এরপরে সুবিধা অনুযায়ী ছোট একটি দোকান বা শপ তৈরি করতে পারেন।

আরো কিছু ব্যবসা আইডিয়া

উপরে উল্লেখিত ব্যবসা আইডিয়া গুলোর পাশাপাশি বর্তমানে আরো অনেক ব্যবসা আছে যেগুলো আপনারা মাত্র ১০ হাজার টাকা ইনভেস্ট করে শুরু করতে পারেন এবং এই ব্যবসাগুলোও বর্তমানে অনেক লাভজনক। যেমনঃ

  • ট্রাভেল এজেন্সি ব্যবসা।
  • অনলাইনে ব্লগিং ব্যবসা।
  • মোবাইল ও ল্যাপটপ সার্ভিসিং সেন্টার।
  • ক্যাটারিং সার্ভিস ব্যবসা।
  • মোবাইলে রিচার্জ ব্যবসা।
  • বিভিন্ন ধরনের মসলা বিক্রির ব্যবসা।
  • ছোট পরিসরে খাবারের দোকান।
  • অনলাইন কিংবা অফলাইনের টিউশনি ব্যবসা।
  • অনলাইনে কাপড় বিক্রি।
  • লন্ড্রি সার্ভিস ব্যবসা।
  • হোম ক্লিনিং সার্ভিস ব্যবসা।
  • বিভিন্ন ধরনের ইলেকট্রিক প্রোডাক্ট বিক্রি।
  • রিসেলিং ব্যবসা।
  • চা ও কফি স্টল তৈরি।
  • মোমবাতির ব্যবসা।

আমাদের শেষকথা

সম্মানিত পাঠক বৃন্দ আশা করি 10 হাজার টাকায় ব্যবসা আইডিয়াগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন। এই ব্যবসা গুলো শুরু করার পূর্বে প্রপার পরিকল্পনা তৈরি করবেন এবং সৎভাবে ব্যবসা পরিচালনা করলে আশা করি দ্রুত সফল হতে পারবেন।

আমাদের এই ওয়েবসাইটে ব্যবসা সম্পর্কিত বিভিন্ন ধরনের গুরুত্বপূর্ণ আর্টিকেল পাবলিশ করা হয়। আশা করব ওয়েবসাইটের সাথে যুক্ত থেকে আমাদের আর্টিকেলগুলো দেখবেন এবং আপনার ব্যবসা সম্পর্কে জ্ঞান বৃদ্ধি করবেন।

আপনার লেখা ব্যবসা সম্পর্কিত যেকোনো ধরনের আর্টিকেল পাবলিশের জন্য আমাদের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন, এছাড়া উপরে উল্লেখিত ব্যবসা আইডিয়া গুলোর মধ্যে আপনার কাছে কোন আইডিয়াটি শ্রেষ্ঠ মনে হয়েছে কমেন্টের মাধ্যমে জানাবেন।

FAQs

১০ হাজার টাকায় সব থেকে লাভজনক ব্যবসা কোনটি?

আমি মনে করি বর্তমানে ১০০০০ টাকার মধ্যে সবথেকে লাভজনক ব্যবসা হল অনলাইন এজেন্সি তৈরি। আপনি একটি এজেন্সি তৈরি করে প্রতি মাসে কমপক্ষে ৩০ থেকে ৬০ হাজার টাকা ইনকাম করতে পারেন, যদি কিনা আপনি ওই কাজের উপরে দক্ষ হয়ে থাকেন।

ব্যবসায় সফল হওয়ার জন্য কি করব?

যেকোনো ব্যবসায় সফল হওয়ার জন্য যেটা করা প্রয়োজন সেটি হল ব্যবসা শুরুর পূর্বে প্রোপার পরিকল্পনা করা। এবং সৎ ভাবে ব্যবসা পরিচালনা করে গ্রাহক বৃদ্ধির জন্য বিভিন্নভাবে মার্কেটিং করা।

Business Of BD

হাই,ব্যবসা নিয়েই আমার পড়াশোনা এবং ব্যবসা নিয়েই আমার ক্যারিয়ার। ব্যবসা নিয়ে লিখতে ভালবাসি, তাই ব্যবসা নিয়েই এই ব্লগটি করা।

Related Articles

Back to top button