Business idea

শিক্ষিত লোকের ব্যবসা আইডিয়া

প্রকৃতভাবে যারা প্রতিষ্ঠানিক শিক্ষায় শিক্ষিত, তাদের ব্যবসায় সম্পর্কে জ্ঞান একটু বেশি থাকে। আপনি যদি কলেজ কিংবা ইউনিভার্সিটির স্টুডেন্ট হয়ে থাকেন অথবা পড়াশোনা শেষ করে বর্তমানে একটি ব্যবসা করা চাচ্ছেন তাহলে এই লেখাটি আপনার জন্য। এই লেখাটিতে শিক্ষিত লোকের ব্যবসা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে।

শিক্ষিত লোকরা প্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন বিষয়ের উপর জ্ঞান অর্জন করে নিজেদের দক্ষতা বৃদ্ধি করেছে। তারা চাইলে নিজেদের জ্ঞানকে সঠিক ব্যবহার করে সুন্দরভাবে একটি ব্যবসা পরিচালনা করতে পারে। চলুন জেনে নেই শিক্ষিত লোকের ব্যবসা সম্পর্কে।

শিক্ষিত লোকের ব্যবসা সমূহ

সাধারণত শিক্ষিত লোকেরা তাদের দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে একটি শিক্ষামূলক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে পারে। যেই প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে দেশ ও জাতির উন্নতি হবে, এর পাশাপাশি উদ্যোক্তার প্রতিদিনের চাহিদা মেটাতে পর্যাপ্ত পরিমাণ টাকা ইনকাম হবে।

যেহেতু শিক্ষিত লোকেদের ব্যবসা সম্পর্কে প্রতিষ্ঠানিক জ্ঞান থাকে সেহেতু তারা চাইলে খুব সহজেই একটি ব্যবসা দাঁড় করাতে পারবে। চলুন শিক্ষিত লোকের কয়েকটি ব্যবসা আইডিয়া সম্পর্কে জেনে নেই।

১.কোচিং সেন্টার তৈরি

কোচিং সেন্টার তৈরি একটি পুরনো ব্যবসা আইডিয়া। আপনার যদি পড়ালেখা সম্পর্কে ধারণা থাকে এবং আপনি যেকোন একটি সাবজেক্টের উপরে বেশি পারদর্শী হন সেক্ষেত্রে উক্ত সাবজেক্ট এর উপরে একটি কোচিং সেন্টার তৈরি করতে পারেন।

বর্তমান যুগে কোচিং সেন্টার এর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার পাশাপাশি ছাত্ররা অধিক জ্ঞান অর্জনের লক্ষে বিভিন্ন কোচিং সেন্টারে শিক্ষা লাভ করে। কোচিং সেন্টার এর ব্যবসা শুরু করতে অনেক বেশি টাকা ইনভেস্ট করতে হবে না।

প্রথমে একটি হল বা রুম ভাড়া নিয়ে কোচিং সেন্টার তৈরি করতে পারেন, অথবা আপনার নিজের বাসায় কোচিং সেন্টার তৈরি করতে পারেন। এরপরে ব্ল্যাকবোর্ড, কলমসহ অন্যান্য ইকুইপমেন্ট ক্রয় করতে ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা যথেষ্ট। মাত্র এই কয় টাকা ইনভেস্টে আপনি কোচিং সেন্টারে ব্যবসা শুরু করতে পারেন।

সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ পোস্টঃ তরুনদের জন্য ব্যবসা আইডিয়া।

২.অনলাইনে কোর্স বিক্রি

এটাও কোচিং সেন্টার রিলেটেড একটি ব্যবসা। এই ব্যবসায় আপনি বিভিন্ন বিষয়ের উপরে কোর্স তৈরি করে অনলাইনে বিক্রি করতে পারবেন। অনলাইনে কোর্স বিক্রি করে এমন প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে সবথেকে বড় উদাহরণ হল রবি ১০ মিনিট স্কুল।

এই ব্যবসা করার জন্য প্রথমে আপনাকে একটি ফেসবুক পেজ এবং ওয়েবসাইট তৈরি করতে হবে। এরপরে যেকোন বিষয়ের উপর মানসম্মত একটি কোর্স তৈরি করে, অনলাইনে প্রচারণা চালিয়ে বিক্রি করতে পারবেন। এই ব্যবসা করার জন্য প্রথম দিকে ২০-৩০ হাজার টাকা ইনভেস্ট করতে হবে।

ওয়েবসাইট বানানোর খরচ এবং অনলাইনে প্রচারণা চালানোর খরচ মিলিয়ে ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা যথেষ্ট। বর্তমানে অনলাইনে ইংরেজি কোর্স, বিসিএস প্রণালী কোর্স, বাংলা ব্যাকরণ কোর্স, তথ্য যোগাযোগ ও প্রযুক্তি কোর্স, বিভিন্ন ফ্রিল্যান্সিং বিষয়ের উপরের কোর্সগুলো বেশি বিক্রি হয়।

৩.রেস্টুরেন্ট ব্যবসা

বর্তমানে রেস্টুরেন্ট ব্যবসা অনেক জনপ্রিয় ও লাভজনক একটি ব্যবসা। আপনি যদি শিক্ষিত হয়ে থাকেন, এবং বিভিন্ন নতুন নতুন মার্কেটিং আইডিয়া ও হিসাব সম্পর্কে জানেন তাহলে এই ব্যবসাটি শুরু করতে পারবেন।

রেস্টুরেন্ট ব্যবসা করার জন্য প্রথমে একটি ভালো জায়গা নির্ধারণ করতে হবে, এরপরে সুন্দর ডেকোরেশন করে একটি রেস্টুরেন্ট তৈরি করতে হবে। রেস্টুরেন্ট ব্যবসায় সফল হওয়ার জন্য সবথেকে বেশি লক্ষ্য রাখতে হবে খাবারের দিকে।

আপনার রেস্টুরেন্টের খাবার যত সুস্বাদু হবে, গ্রাহকরা আপনার রেস্টুরেন্টের খাবার তত বেশি পছন্দ করবে। এই ব্যবসা শুরু করার জন্য কমপক্ষে ৫ থেকে ১০ লক্ষ টাকা ইনভেস্ট করতে হবে। আপনার কাছে পর্যাপ্ত মূলধন থাকলে রেস্টুরেন্টের ব্যবসা শুরু করতে পারেন।

৪.ট্রাভেল এজেন্সি ব্যবসা

প্রতিবছর বিদেশ থেকে বিপুল পরিমাণে টুরিস্টরা বাংলাদেশে ঘুরতে আসে। এছাড়াও অবসর সময় কাটানোর জন্য বাংলাদেশের অনেক নাগরিকরা বিভিন্ন স্থানে ঘুরতে যায়। আপনি এই সেক্টরে একটি ট্রাভেল এজেন্সি ব্যবসা দাঁড় করাতে পারেন।

আপনার এজেন্সির কাজ হবে টুরিস্টদের তাদের নির্ধারিত স্থানে ঘুরিয়ে আনা। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে এই ব্যবসার কম্পিটিশন অনেক কম। আপনি যদি এখন থেকে একটি ট্রাভেল এজেন্সি ব্যবসা শুরু করতে পারেন আশা করি ৫-৭ বছরের মধ্যে এটিকে বাংলাদেশী টপ ব্যবসাগুলোর মধ্যে একটি হিসেবে গড়ে তুলতে পারবেন।

সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ পোস্টঃ 10 হাজার টাকায় ব্যবসা আইডিয়া।

৫.শিক্ষার্থীদের বিদেশ ভ্রমণে সহায়তা

এই ব্যবসাটি বাংলাদেশ ও ইন্ডিয়ার ক্ষেত্রে ১০০% ইউনিক। এই ব্যবসাটির মূল কাজ হল যে সকল শিক্ষার্থীরা উচ্চশিক্ষা লাভের উদ্দেশ্যে বিদেশে ভ্রমণ করতে ইচ্ছুক তাদের ভ্রমণে সহায়তা করা। যেমন সঠিক পরামর্শ দেয়া, ভিসা সংক্রান্ত বিভিন্ন সমস্যার সমাধান করে দেয়া, পড়াশোনার প্রস্তুতি বিষয়ে জ্ঞান প্রদান ইত্যাদি।

অনেক শিক্ষার্থী আছে যারা সঠিক পরামর্শের অভাবে উচ্চশিক্ষা লাভের জন্য বিদেশ ভ্রমণ করতে পারে না। আপনার এজেন্সি তাদের সঠিক পরামর্শ প্রদান করে বিদেশ ভ্রমণের জন্য সকল সহায়তা করবে। এর বিনিময়ে নির্দিষ্ট পরিমাণে একটি ফি কাটা হবে।

এই ব্যবসা সম্পর্কে আমাদের শেষকথা

সম্মানিত পাঠ্যবৃন্দ আশা করি শিক্ষিত লোকের কয়েকটি ব্যবসা সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। বর্তমানে এই ব্যবসা গুলো অনেক লাভজনক এবং ইউনিক। আপনার কাছে যদি পর্যাপ্ত মূলধন থাকে তাহলে খুব সহজেই এর থেকে যেকোনো একটি ব্যবসা শুরু করতে পারেন।

উপরে আলোচিত ব্যবসায় আইডিয়া গুলোর মধ্য থেকে আপনার কাছে কোন আইডিয়াটি সবথেকে ভালো মনে হয়েছে কমেন্টের মাধ্যমে আমাদের জানাবেন।

FAQs

ট্রাভেল এজেন্সি ব্যবসা করতে কত টাকা প্রয়োজন?

প্রথম দিকে ছোট পরিসরে একটি ট্রাভেল এজেন্সির ব্যবসা শুরু করার জন্য কমপক্ষে ৫০,০০০ থেকে ১,০০,০০০ টাকা প্রয়োজন। এরপরে আস্তে আস্তে ব্যবসার পরিধি বৃদ্ধির সাথে সাথে ব্যবসার মূলধন বৃদ্ধি পাবে।

কিভাবে একটি ব্যবসা শুরু করব?

একটি ব্যবসা শুরু করার পূর্বে প্রথমে ওই ব্যবসা সম্পর্কে প্রপার পরিকল্পনা করতে হবে। এরপরে বিভিন্ন অভিজ্ঞ লোকের কাছ থেকে ব্যবসা সম্পর্কে জানতে হবে, ব্যবসায়ের মালামাল বা ইকুইপমেন্ট সংগ্রহ করতে হবে।

Business Of BD

হাই,ব্যবসা নিয়েই আমার পড়াশোনা এবং ব্যবসা নিয়েই আমার ক্যারিয়ার। ব্যবসা নিয়ে লিখতে ভালবাসি, তাই ব্যবসা নিয়েই এই ব্লগটি করা।

Related Articles

Back to top button