ঘরে বসে বিনা পুঁজিতে ব্যবসা আইডিয়া
বর্তমানে তরুণ প্রজন্ম চাকরি থেকে ব্যবসার দিকে বেশি নজর দিচ্ছে। কিন্তু অনেকের কাছে পর্যাপ্ত মূলধন না থাকায় ব্যবসা শুরু করতে পারছে না। এই লেখাটিতে ঘরে বসে বিনা পুঁজিতে ব্যবসা আইডিয়া সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে।
ভালোভাবে একটি ব্যবসা শুরু করতে অবশ্যই পুঁজি প্রয়োজন। বিনা পুঁজিতে কোন ব্যবসা শুরু করা সম্ভব নয়। তবে তথ্যপ্রযুক্তির যুগে আমাদের ইন্টারনেট জ্ঞান এবং সোশ্যাল মিডিয়াগুলো ব্যবহার করে কোন টাকা ইনভেস্ট না করে মোটামুটি ভালো এমাউন্টের টাকা প্রতি মাসে ইনকাম করতে পারবো।
সাধারণত আমাদের হাতে থাকা স্মার্টফোনটি ব্যবহার করে ফেসবুক, ইউটিউব, ইনস্টাগ্রাম এর মতো সোশ্যাল মিডিয়া গুলো ব্যবহার করে আমাদের স্কিল কাজে লাগিয়ে বেশ কিছু টাকা ইনকাম করতে পারব। এবং পরবর্তীতে এই টাকাগুলো দিয়ে একটি ভালো একটি ব্যবসা দাঁড় করাতে পারবো।
ঘরে বসে বিনা পুঁজিতে ব্যবসা
ঘরে বসে বিনা পুঁজিতে ব্যবসা আইডিয়া নেই বললেই চলে। তবে কিছু কিছু কাজ আছে যেগুলো আপনাকে কোন ইনভেস্ট ছাড়া টাকা ইনকাম করতে সহযোগিতা করবে। তার মধ্যে অন্যতম হলো ফ্রিল্যান্সিং, যা একটি মোবাইল কিংবা কম্পিউটার ও ইন্টারনেট কানেকশন থাকলে শুরু করতে পারেন।
এছাড়াও আরো কয়েকটি বিজনেস আইডিয়া আছে, যেগুলো পরিচালনার জন্য আপনার পর্যাপ্ত স্কিল থাকা প্রয়োজন। আপনার এই স্কিল গুলো কাজে লাগিয়ে প্রতিমাসে বিনা পুঁজিতে অনেক টাকা ইনকাম করতে পারবেন।
আপনার কাছে পর্যাপ্ত পুঁজি না থাকার পরেও, আপনি ব্যবসা করে নিজেকে স্বাবলম্বী করতে চান। তাহলে আমাদের business of bd টিমের পক্ষ থেকে আপনাকে সাধুবাদ জানাই। প্রথম দিকে একটু কষ্ট করে কিছু টাকা ইনকাম করে পরবর্তীতে ওই টাকাগুলো ব্যবসায়ের পিছনে ইনভেস্ট করতে পারবেন।
ইন্টারনেটের অগ্রগতির ফলে অনেক উপায়ে আপনারা বিনা পুঁজিতে টাকা ইনকাম করতে পারবেন। চলুন বিনা পুঁজিতে টাকা ইনকামের কয়েকটি পদ্ধতি সম্পর্কে জেনে নেই।
১.রিসেলার ব্যবসা করা
বর্তমানে এই ব্যবসাটি অনেক পরিচিতি পেয়েছে। আপনার যদি পর্যাপ্ত মূলধন না থাকে তাহলে বিভিন্ন কোম্পানির কিংবা অনলাইন শপিং এর রিসেলার হিসেবে কাজ করতে পারেন। রিসেলার এর কাজ হল উক্ত কোম্পানির হয়ে মালামাল বিক্রি করা, এর বিনিময়ে কোম্পানি আপনাকে কমিশন প্রদান করবে।
এই ব্যবসা করার জন্য কোন ধরনের ইনভেস্ট প্রয়োজন নেই। যদি আপনার সোশ্যাল মিডিয়ার সম্পর্কে জানা থাকে এবং মালামাল বিক্রি করার জ্ঞান থাকে তাহলে বিভিন্ন কোম্পানি ও অনলাইন শপিং এর হয়ে রিসেলার হিসেবে কাজ করতে পারবেন।
২.সোশ্যাল মিডিয়ার সার্ভিস ব্যবসা
সোশ্যাল মিডিয়া সার্ভিস ব্যবসা বলতে বুঝানো হয়েছে ফেসবুক লাইক ফলোয়ার কমেন্ট এবং instagram ফলোয়ার লাইক, ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব ওয়াচ টাইম ও ভিউস ইত্যাদি বিক্রি করা। বর্তমানে অনেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় এই ব্যবসাটি করে থাকেন।
এখানে আপনারা কোন ধরনের ইনভেস্ট ছাড়া বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া সার্ভিস কোম্পানির রিসেলার হয়ে কাজ করতে পারবেন। ফেসবুকে এই সম্পর্কে যাচাই করলে অনেক SMM প্যানেল পেয়ে যাবেন, যারা এই ধরনের সার্ভিস প্রদান করে।
সম্পর্কিত কয়েকটি আর্টিকেলঃ
খুব সহজেই ফেসবুকে বা instagram-এ মার্কেটিং করে এই সার্ভিসগুলো বিক্রি করতে পারবেন। এই সার্ভিসগুলো সাধারণত নতুন ইউটিউব কিংবা ইনস্টাগ্রাম ব্যবহারকারী নিয়ে থাকেন। তাই ফেসবুকে এদেরকে টার্গেট কাস্টমার বানিয়ে এই ব্যবসাটি শুরু করতে পারেন।
৩.টিউশনি ব্যবসা করা
টিউশনি ব্যবসার কথা শুনলে আমাদের মনে পড়ে বড় কোচিং সেন্টার, ৫ থেকে ৭ জন টিচারের কথা। কিন্তু না, বর্তমানে এর বাহিরেও আপনারা ঘরে বসে টাকা ইনভেস্ট না করে টিউশন ব্যবসা শুরু করতে পারেন। তবে এই ব্যবসা করার জন্য আপনার পড়ালেখা বিষয়ে বিশেষ দক্ষতা থাকতে হবে।
কেননা স্টুডেন্টরা আপনার কাছে শিখতে আসবে, আপনি যত দ্রুত এবং যত সহজ পদ্ধতিতে স্টুডেন্টদের সমস্যার সমাধান করতে পারবেন, আপনার ব্যবসার প্রচার তত বেশি হবে। এই ব্যবসা আপনি নিজের ঘরে বসে পরিচালনা করতে পারেন।
এছাড়াও বর্তমানে অনলাইনের যুগে একটি ইউটিউব চ্যানেল ক্রিয়েট করে ইউটিউবে শিক্ষনীয় বিভিন্ন টিউটোরিয়াল ভিডিও আপলোড করেও টাকা ইনকাম করতে পারবেন। তাই বিনা পুজিতে সবথেকে লাভজনক ব্যবসা হলো টিউশন ব্যবসা।
৪.ডিজিটাল মার্কেটিং করা
এটি ফ্রিল্যান্সিং এর একটি লাভজনক সম্ভাবনাময় সেক্টর। ডিজিটাল মার্কেটিং এর কাজ হল কোন ব্র্যান্ডের বা কোম্পানির হয়ে অনলাইনে মার্কেটিং করা তথা অনলাইনে উক্ত ব্রান্ড প্রমোশন করা। যেমন ফেসবুক ও গুগল এড ইত্যাদি।
ডিজিটাল মার্কেটিং এর কাজ আপনারা মোবাইল থেকেও করতে পারবেন। এইটা শেখার জন্য ইউটিউবে অনেক টিউটোরিয়াল ভিডিও আছে, যেগুলো দেখে খুব সহজে ডিজিটাল মার্কেটিং শিখতে পারবেন। ডিজিটাল মার্কেটিংএ বিশেষ দক্ষতা অর্জন করতে পারলে দেশের বাহিরে কাজ পাওয়ার সুযোগ রয়েছে।
বর্তমানে ফ্রিল্যান্সিংয়ের সব থেকে লাভজনক ও সম্ভাবনাময় সেক্টর গুলোর মধ্যে ডিজিটাল মার্কেটিং অন্যতম। এছাড়াও ডিজিটাল মার্কেটিংয়ে আপনার বিশেষ দক্ষতা থাকলে এই সেক্টরের উপর ভিত্তি করে একটি কোম্পানি দাঁড় করাতে পারেন।
৫.ঘটক ব্যবসা করা
সাধারণত এই ব্যবসা আইডিয়া সম্পর্কে বেশিরভাগ মানুষ পরিচিত নয়। কেননা এই ব্যবসা আইডিয়া সম্পর্কে আলোচনা করা হয় না। কিন্তু বিনা পুঁজিতে অন্যতম লাভজনক ব্যবসা আইডিয়া এটি। ঘটক ব্যবসা করার জন্য বর্তমানে আপনার অন্যের বাড়ি ঘুরে পাত্র-পাত্রী ছবি সংগ্রহ করার প্রয়োজন নেই।
আপনারা ফেসবুকে একটি পেইজ ক্রিয়েট করে অথবা একটি ওয়েবসাইট তৈরি করে এই ব্যবসা পরিচালনা করতে পারবেন। যেখানে পাত্র পাত্রীরা এসে অ্যাকাউন্ট রেজিস্টার করে তাদের ছবি দিয়ে বিয়ের প্রপোজাল পাঠাতে পারবে। উদাহরণস্বরূপ বিবাহবিডি দেখতে পারেন।
ইউনিক ব্যবসা আইডিয়া গুলোর মধ্যে এটি অন্যতম। বর্তমানে এই ব্যবসার উপর নির্ভর করে বাংলাদেশে অনেক এজেন্সি চালু হয়েছে। তাই প্রথম দিকে একটু পরিশ্রম করে একটি ঘটক ব্যবসা এজেন্সি দাঁড় করাতে পারেন।
আপনি কেন ব্যবসা করবেন
ব্যবসা হল একমাত্র মুক্ত পেশা এখানে আপনার স্বাধীনতা অনুযায়ী কাজ করতে পারবেন। এবং আপনি যদি নিজের স্বাধীনতা অনুযায়ী নিজের অধীনে নিজে কাজ করতে চান তাহলে একমাত্র উপায় হল ব্যবসা করা। একটি ব্যবসা কোম্পানি দাঁড় করানোর জন্য প্রথমে আপনাকে অনেক পরিশ্রম করতে হবে।
এছাড়াও ব্যবসা করার জন্য আপনার ঝুঁকি নেওয়ার ক্ষমতা থাকতে হবে। কেননা ব্যবসা এমন একটি ইনকাম মাধ্যম যেখানে লাভ-লস উভয়ই মিলিত থাকে। আপনার একটি ভুলের কারণে এই ব্যবসায় আপনার লস হতে পারে।
অথবা আপনার একটি মার্কেটিং আইডিয়ার কারণে আপনার ব্যবসাটি দ্রুত অনেক বড় একটি কোম্পানি হিসেবে পরিচিতি লাভ করতে পারে। আমাদের চিন্তাধারা অনুযায়ী বর্তমানের তরুণ সমাজকে ব্যবসা করা উচিত।
কেননা অন্যের অধীনে চাকরি না করে নিজেদের এবং দেশকে আরও অনেক দূর এগিয়ে নেয়ার ক্ষেত্রে ও দেশের বেকারত্ব দূর করার ক্ষেত্রে ব্যবসা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
FAQs
স্বল্প পুঁজিতে লাভজনক পাইকারি ব্যবসা হল কাগজের প্যাকেট তৈরি। পুরনো কাগজ ক্রয় করে প্যাকেট তৈরি করে বাজারে বিক্রি করা এই ব্যবসার মূলমন্ত্র। এই ব্যবসা করার জন্য অল্প টাকা ইনভেস্ট করার প্রয়োজন হবে।
টিউশন ব্যবসা করা, ঘরে বসে টিউশনি করিয়ে প্রতি মাসে অনেক টাকা ইনকাম করতে পারবেন। এই ব্যবসায় আপনার কোন টাকা ইনভেস্ট করার প্রয়োজন নেই তাই লস হওয়ার কোন সম্ভাবনা নেই।