ঘরে বসে ক্ষুদ্র ব্যবসা করার নিয়ম এবং কয়েকটি ক্ষুদ্র ব্যবসা আইডিয়া
আপনি কি নিজের চাহিদা মেটানোর জন্য ঘরে বসে ক্ষুদ্র ব্যবসা করতে চাচ্ছেন, কিন্তু কিভাবে ব্যবসা শুরু করবেন এবং ক্ষুদ্র ব্যবসার আইডিয়া খুঁজে পাচ্ছেন না? তাহলে এই লেখাটি আপনার জন্য। এই লেখাটিতে আমরা ঘরে বসে স্বল্প খরচে ক্ষুদ্র ব্যবসা করার নিয়ম ও ক্ষুদ্র ব্যবসার আইডিয়া সম্পর্কে আলোচনা করব।
ঘরে বসে ছোট্ট পরিসরে ব্যবসা করার পদ্ধতিকে ক্ষুদ্র ব্যবসা বলা হয়। বর্তমানে অনেকেই ঘরে বসে ক্ষুদ্র ব্যবসার মাধ্যমে নিজেদের স্বাবলম্বী করে তুলেছে। তাই আপনার কাছে যদি পর্যাপ্ত মূলধন থাকে তাহলে আপনি আজ থেকে ঘরে বসে ব্যবসা শুরু করতে পারেন।
ঘরে বসে ক্ষুদ্র ব্যবসা করার নিয়ম
ঘরে বসে ছোট পরিসরে ব্যবসা করে নিজেদের স্বাবলম্বী করার জন্য প্রথমে একটি লাভজনক ব্যবসা বাছাই করতে হবে। এরপরে পর্যাপ্ত মূলধন নিয়ে উক্ত ব্যবসা সম্পর্কে সম্পূর্ণ পরিকল্পনা তৈরি করে ব্যবসার পিছনে টাকা ইনভেস্ট করতে হবে।
যেকোনো একটি ব্যবসা আইডিয়া সিলেক্ট করার পরে অনলাইনে উক্ত ব্যবসা আইডিয়া নিয়ে রিসার্চ করুন। এবং ইতিমধ্যে ওই ব্যবসার মাধ্যমে যারা সফলতা অর্জন করেছে, তাদের সাথে যোগাযোগ করে তাদের সফলতার মূলমন্ত্র সম্পর্কে জানার চেষ্টা করুন।
এছাড়াও একটি ব্যবসা শুরু করার আগে ব্যবসায়ের সম্পূর্ণ পরিকল্পনা, ব্যবসায়ের স্থান, টার্গেট কাস্টমার ও মার্কেটিং সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিবেন। চলুন নতুন কিছু ব্যবসা আইডিয়া সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেই।
ক্ষুদ্র ব্যবসার আইডিয়া
একটি ক্ষুদ্র ব্যবসা শুরু করার পূর্বে কিছু ইউনিক ব্যবসা আইডিয়া সম্পর্কে অবশ্যই জেনে নেওয়া উচিত। কেননা আপনি এই বিষয় নিয়ে যত বেশি রিসার্চ করবেন, আপনার ব্যবসা আইডিয়া খুঁজে পেতে তত সুবিধা হবে।
আপনাদের সুবিধার্থে বর্তমান সময়ের লাভজনক ঘরে বসে পরিচালনা করা যায় এমন কিছু ক্ষুদ্র ব্যবসার আইডিয়া নিচে উল্লেখ করা হলো।
১.নকশী কাঁথা তৈরীর ব্যবসা
বর্তমান সময়ের লাভজনক ব্যবসা গুলোর মধ্যে নকশী কাঁথার ব্যবসা অন্যতম। আপনার যদি নকশী কাঁথা তৈরিতে দক্ষতা থাকে তাহলে ঘরে বসে এই ক্ষুদ্র ব্যবসাটি শুরু করতে পারেন। এই ব্যবসাটি শুরু করার জন্য প্রাথমিক ইনভেস্ট অনেক কম হবে।
ঘরে বসে নিজের প্রতিভা ও সময়কে কাজে লাগিয়ে একটি নকশী কাঁথা তৈরীর ব্যবসা চালু করতে পারেন। ঘরে বসে নকশি কাঁথা তৈরি করে অনলাইনের মাধ্যমে অথবা বাজারে পাইকারি দামে বিক্রি করতে পারবেন।
সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ আর্টিকেলঃ ছোট ফ্যাক্টরি আইডিয়া।
২.বিস্কুট তৈরির ব্যবসা
ঘরে বসে করা যায় এমন আরেকটি ব্যবসা হল বিস্কুট তৈরির ব্যবসা। বাজারে প্যাকেটজাত করা অনেক বিস্কুট বেশিরভাগ ক্ষেত্রে অস্বাস্থ্যকর হয়ে থাকে। যার ফলে গ্রাহকরা বেকারি বিস্কুট অনেক পছন্দ করে। আপনার ব্যবসায়ের মূলধন যদি ২০,০০০ থেকে ৩০,০০০ টাকা হয় তাহলে এই ব্যবসাটি শুরু করতে পারেন।
ঘরে বসে বিস্কুট তৈরির ব্যবসা পরিচালনা করতে পারবেন। ভালো স্বাদের ও বিভিন্ন আকর্ষণীয় ডিজাইনের বিস্কিট তৈরি করে বাজারে বিভিন্ন দোকানে সাপ্লাই দিতে পারেন। যদি আপনার বিস্কিট ক্রেতাদের পছন্দ হয় তাহলে আপনি এই ব্যবসায়ের উপরে ভিত্তি করে একটি বেকারী ব্যবসা শুরু করতে পারবেন।
৩.খেলনা তৈরির ব্যবসা
ঘরে বসে বাচ্চাদের খেলনার তৈরি করে প্রতি মাসে কমপক্ষে আপনি ১৫,০০০ টাকা ইনকাম করতে পারবেন। খেলনা তৈরির ব্যবসা মাত্র ৫০,০০০ থেকে ১,০০,০০০ টাকা ইনভেস্ট করে শুরু করতে পারেন। তবে বাচ্চাদের খেলনা তৈরি করার জন্য আপনাকে প্রথমে প্রশিক্ষণ নিতে হবে।
বাজার থেকে খেলনা তৈরির বিভিন্ন সরঞ্জাম ও মেশিন ক্রয় করে ঘরে বসে এই ব্যবসাটি পরিচালনা করতে পারবেন। বিভিন্ন আকর্ষণীয় ডিজাইনের বাচ্চাদের খেলনা তৈরি করে এগুলোকে বাজারের খেলনার দোকানে পাইকারি দামে বিক্রি করতে পারবেন।
৪.অনলাইনে ই-কমার্স ব্যবসা করা
বর্তমানে অনলাইন ব্যবসা অনেক জনপ্রিয়তা পেয়েছে। আপনি চাইলে ঘরে বসে অল্প কিছু টাকা ইনভেস্ট করে ফেসবুক এর মাধ্যমে অথবা ওয়েবসাইট তৈরি করে একটি ই-কমার্স ব্যবসা পরিচালনা করতে পারেন।
অনলাইনের মাধ্যমে কাস্টমারদের থেকে অর্ডার নিয়ে বিভিন্ন কুরিয়ার/ ডেলিভারি সার্ভিস এর মাধ্যমে এগুলো কাস্টমারের লোকেশনে পৌঁছে দিতে পারেন। ওয়েবসাইট তৈরি ছাড়াও সম্পূর্ণ ফ্রিতে একটি ফেসবুক পেজ তৈরি করে অনলাইনে ই-কমার্স/এফ-কমার্স ব্যবসা পরিচালনা করতে পারবেন।
অনলাইনে আপনারা বিভিন্ন ধরনের প্রোডাক্ট বিক্রি করতে পারেন। তারমধ্যে জামাকাপড়, খাবার, অর্গানিক ফুড, গ্যাজেট, কসমেটিক্স, ঔষধ, বাচ্চাদের খেলনা, বিভিন্ন ইলেকট্রনিক্স ডিভাইসের পার্টস, ইলেকট্রনিক ডিভাইস ইত্যাদি।
সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ আর্টিকেলঃ ২০২৩ সালের লাভজনক ব্যবসার আইডিয়া।
৫.আচার তৈরির ব্যবসা
ঘরে বসে লাভজনক ক্ষুদ্র ব্যবসা গুলোর মধ্যে আচার তৈরীর ব্যবসা অন্যতম। আপনি যদি সুস্বাদু আচার তৈরি করতে পারেন তাহলে এটা হতে পারে আপনার জন্য একটি টাকা ইনকামের মাধ্যম। সুস্বাদু আচার তৈরি করে বাজারে বিক্রয় করে অথবা অনলাইনের মাধ্যমে বিক্রয় করে টাকা ইনকাম করতে পারবেন।
আমাদের দেশে অনেক ধরনের আচার তৈরি হয়। যেমনঃ আমের আচার, জলপাইয়ের আচার, বড়ই আচার, চালতা আচার, স্ট্রবেরি আচার, ক্যাপসিক্যাপ পিকল, আমলকি আচার, কামরাঙ্গা আচার, তেতুলের আচার, মাশরুমের আচার ইত্যাদি। আপনি এই ধরনের আচার তৈরি করে একটি ক্ষুদ্র ব্যবসা গড়ে তুলতে পারেন।
ক্ষুদ্র ব্যবসা সম্পর্কে আমাদের শেষকথা
সম্মানিত পাঠক বৃন্দ, উপরে উল্লেখিত ক্ষুদ্র ব্যবসা আইডিয়াগুলো ব্যতীত আরো অনেক ধরনের ব্যবসা রয়েছে। তবে বর্তমান সময়ে এই ব্যবসা আইডিয়াগুলো অনেক জনপ্রিয় এবং লাভজনক তাই আপনাদের সামনে তুলে ধরা হলো।
এখান থেকে যেকোনো একটি ব্যবসা আইডিয়া বাছাই করে শুরু করতে পারেন আপনার ক্ষুদ্র ব্যবসাটি। যেকোনো একটি ব্যবসা আইডিয়া যাচাই করার পরে ইন্টারনেটে উক্ত ব্যবসা সম্পর্কে রিচার্স করবেন।
FAQs
২০,০০০ থেকে ৫০,০০০ টাকার মধ্যে মিডিয়াম পরিসরে একটি ক্ষুদ্র ব্যবসা শুরু করতে পারবেন। তবে ব্যবসা করতে আপনার কত টাকা প্রয়োজন হবে এটা সম্পূর্ণ নির্ভর করবে আপনার ব্যবসার আইডিয়া ও ইনভেস্টের উপর।
বর্তমানে সব থেকে লাভজনক ক্ষুদ্র ব্যবসা গুলোর মধ্যে বাচ্চাদের খেলনা তৈরি অন্যতম। ঘরে বসে বিভিন্ন প্রযুক্তি ব্যবহার করে বাচ্চাদের খেলনা তৈরি করে এগুলো ভালো দামে বাজারে বিক্রি করতে পারবেন।